জলপাইগুড়ি: আমরুত প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে জোর শোরগোল জলপাইগুড়িতে। মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টর কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের (ED) দ্বারস্থ হতে পারে কংগ্রেস (Congress)। যা নিয়ে জোর চর্চা জেলার রাজনৈতিক মহলে। প্রসঙ্গত, আমরুত প্রকল্পের জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশে জলপাইগুড়ি পুর এলাকার ২৫ টি ওয়ার্ডে জোরকদমে কাজ শুরু হয়েছিল বিগত কয়েক বছর আগেই। রাস্তা খুঁড়ে পাইপ লাইনও পাতা হয় শহরের নানা প্রান্তে। পাইপ ফেলার পর মাটি ফেলে গর্তগুলি বুজিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু, অভিযোগ পাকাপাকি ভাবে আরা সারাই করা হয়নি রাস্তাগুলি। তাতেই আজও বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে শহরের ২৫ টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তা। বর্ষায় রাস্তাগুলির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৌম বর্মন বলছেন, “রাস্তার খারাপ অবস্থার জন্য একটা টোটোও গলিতে আসতে চায় না। এই রাস্তাগুলি অবিলম্বে মেরামত করা উচিৎ।” অভিযোগ, এই রাস্তাগুলি সারাই করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরুত প্রকল্পের অধীনে কোটি কোটি টাকা এসেছিল। কিন্তু, কাজে না লাগিয়ে সেই টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। তা নিয়েই এবার সরব জলপাইগুড়ি শহরের কংগ্রেস নেতারা। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে শহর ব্লক কংগ্রেস কমিটির পক্ষ একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়। মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেটের দপ্তরে দীর্ঘ সময় চলে বিক্ষোভ। শেষে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, নিয়ম অনুযায়ী পাইপ লাইন বসানোর জন্য মাটি খোঁড়ার পর প্রথমে পুরু করে বেড মেটেরিয়াল দিতে হয়। তারপর তার উপর বসে পাইপ। পাইপ বসানোর পর তার উপরে ইট বিছিয়ে দিতে হয়। ইটের ওপর ফের পুরু করে বেড মেটেরিয়াল দিতে হয়। তারপর নতুন করে শুরু হয় রাস্তা সারাইয়ের কাজ। পুরো সারাই করে ফের তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই কাজের সিংহভাগ জায়গাতেই রয়েছে ফাঁকি। তাঁদের দাবি, শিডিউল মেনে হয়নি কোনও কাজ। এ বিষয়ে আগামীতে তাঁরা ইডির দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
কংগ্রেস টাউন ব্লক সভাপতি তথা কাউন্সিলর অম্লান মুন্সি বলেন, “আমরুত প্রকল্পের কাজ নিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়রিং ডাইরকেক্টেরটের দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন পৌরসভার অনেক আধিকারিক। প্রকল্পের জন্য শহরের একাধিক বেহাল রাস্তা মেরামতের টাকা এলেও সেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এমইডি থেকে এ সংক্রান্ত যথাযথ উত্তর না পেলে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে আইনের মাধ্যমে ইডি তদন্তেরও দাবি জানানো হবে।” যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মিউনিসিপাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেটের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জিৎনাথ দুবে। তিনি বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রকল্পটি যেহেতু বড় তাই সময় লাগছে অনেকটা। কাজ সবই সরকারি নিয়ম মেনেই হচ্ছে।”