জলপাইগুড়ি: প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য নদীর গতিপথ নাকি ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মাল নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে হড়পা বান এসে বিপর্যয়ের ঘটনায় বিস্ফোরক দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীর গতিপথ আটকানো, আদৌ কি এটা সম্ভব? যদি সম্ভব, তাহলে তার তো নির্দিষ্ট কোনও প্রক্রিয়া, নিয়ম থাকবে? তা কি মানা হয়েছিল?
বৃহস্পতিবার সকালে বিপর্যয়স্থল ঘুরে দেখার সময়ে চোখে পড়ে একটি মঞ্চ। সেই মঞ্চ ভেঙে গিয়েছে। সেখানেই বুধবার সন্ধ্যায় বসে ছিলেন বিধায়ক বুলুচিক বরাই, আইসি, ডিএসপি। তাঁদের চোখের সামনেই হাজার হাজার মানুষ ওই নদীতে নেমেছিলেন। পুলিশ কোনও বাধা দেয়নি বলেই জানা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রতিমা নিরঞ্জনের সুবিধার্থে, নদীর গতিপথটা কিছুটা বদলাতে চেষ্টা করেছিল প্রশাসন। অর্থাৎ সে জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তার ভৌগোলিক অবস্থান এমন, মাঝখানে নদীর চর পড়েছে, দু’পাশ দিয়ে সরু খাতে বয়ে গিয়েছে মাল নদী। প্রশাসন জলের গতি ও জলস্তর বাড়াতে, একটি সরু খাত বন্ধ করে জলটিকে অপর খাত দিয়ে বার করতে চেয়েছিল। বছরের পর বছর এই মাল ঘাটেই প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। বহু মানুষ এই ভাবেই নদীতে নেমে প্রতিমা নিরঞ্জন করেন।
প্রতিমা নিরঞ্জনের আদর্শ নিয়ম এটাই যে, পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা ঘাট পর্যন্ত নিয়ে আসেন। তারপর পুরসভা কিংবা সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা প্রতিমা নদীতে নিরঞ্জন করবেন। তাঁরা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষিত হন। তাতে বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রত্যক্ষদর্শীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ করছেন। তাঁদের দাবি, দুর্ঘটনার তৎক্ষণাৎ পরেই প্রশাসনের তরফে কেউ কিংবা কোনও প্রশিক্ষিত ব্যক্তিকে উদ্ধারকার্যে নামানো হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা, চা বাগানের শ্রমিকরা প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্ধারকার্যে এগিয়ে এসেছিলেন। এমনকি পুলিশ সেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে লাঠিচার্জ করেছিল বলেও অভিযোগ।
অবশ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, রাতভর তল্লাশি চালাচ্ছে এনডিআরএফ-এর দল। কিন্তু এখন ওই নদী খাতে জল এতটাই কম যে সেখানে স্পিড বোডে তল্লাশি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। নদীর পাড় ধরে হেঁটেও খোঁজ চালানো হচ্ছে।