জলপাইগুড়ি: দিনের পর দিন প্রেম করে বিয়ের সময় মুখ ফিরিয়ে নেবে প্রেমিক? অতই সোজা? সেই দাবি আদায়ে কিছুদিন আগে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধরনায় বসেছিলেন ধূপগুড়ির খট্টিমারির সঙ্গীতা রায়। পেশায় বন সহায়িকা তিনি। ভালবাসেন যাঁকে, সেই শুভঙ্কর রায় আবার স্কুলের শিক্ষক। প্রেমিকার এমন কাণ্ডে চরম বিড়ম্বনা বাড়ায় ‘স্যরের’। কিন্তু অধিকার বুঝে নেওয়ার প্রখর দাবি নিয়ে সঙ্গীতাও একবগ্গা। পুলিশ কাছারি করে অবশেষে শুভঙ্করের সঙ্গেই ছাদনাতলায় গেলেন সঙ্গীতা। ফের ধরনাতেই এল জয়। পান পাতায় মুখ ঢাকলেন সঙ্গীতা, শুভঙ্করের সঙ্গেই শুভদৃষ্টি, চার হাত এক হল। পিছনে তখন বিসমিল্লা খাঁর সানাই।
শালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কালিরহাটের বাসিন্দা শুভঙ্কর রায়। অন্যদিকে খট্টিমারিতে বাড়ি সঙ্গীতার। গত ৫ মে সাত সকালে সঙ্গীতা এসে হাজির হন শুভঙ্করের বাড়ির সামনে। একটি চেয়ার পেতে অবস্থানে বসেন তিনি। সঙ্গীতার বক্তব্য ছিল, শুভঙ্করের সঙ্গে প্রায় ছ’ বছর ধরে তাঁর প্রেম। প্রায়ই বিয়ে, সংসার নিয়েও কথা হত। কিন্তু বিয়ের দিনক্ষণ নিয়ে কিছুতেই কথা বলতে চাইতেন না ওই শিক্ষক। এদিকে সঙ্গীতার বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে চাপ আসছিল। সঙ্গীতার অভিযোগ ছিল, শুভঙ্কর চাকরি পেতেই বিয়ের কথায় বেঁকে বসেন।
৫ মে সন্ধ্যায় ধূপগুড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সঙ্গীতাকে। তখনও অনড় তরুণী বলেন, শুভঙ্করের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আগে বিয়েতে রাজি হলেও এখন বিয়ে করতে চাইছে না। শুভঙ্করের বাবা সঙ্গীতার সঙ্গে ছেলের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করে নেন। তবু কাজ না হওয়ায় সঙ্গীতা শুভঙ্করের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করেন ধূপগুড়ি থানায়।
এরপরই চাকা ঘোরা শুরু। সরকারি চাকরি, পুলিশের খাতায় নাম উঠলে জটিলতা বাড়বে। দুই পরিবার দফায় দফায় কথা বলে। ৯ মে পাকা কথা, ১২ মে চার হাত এক হয়ে যায় তাঁদের। ব্যান্ড পার্টি নিয়ে বরযাত্রী সহযোগে সঙ্গীতাদের বাড়িতে যান শুভঙ্কর। দারুণ হইহই বিয়ের বাসরে। শুভঙ্করের পরানো সিঁদুরেই সীমন্তিনী হন সঙ্গীতা।
এর আগে ধূপগুড়ি পুর এলাকায়ও একই ঘটনা দেখা যায়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জিত রায় ও লক্ষ্মী রায়ের বিয়েও এই ধরনার পরই। এ ক্ষেত্রে অবশ্য ধরনা দেন সঞ্জিত। লক্ষ্মীও রাজিই ছিল সঞ্জিতকে বিয়ে করতে। তবে বাড়ির লোক বেঁকে বসেছিলেন। নাছোড় সঞ্জিত ঘরে লক্ষ্মীই নেবেন, সেই পণ করে ধরনায় বসেন। এরপর গত মঙ্গলবার বিয়ে হয় তাঁদের।