জলপাইগুড়ি: শহর থেকে শহরতলি, গ্রাম, মফঃস্বল, কলকাতা থেকে জেলা। বর্ষা নামতেই হু হু করে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ, সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে একই ছবি। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর (Health Department)। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি পুর এলাকাগুলিতেও ডেঙ্গি (Dengue) প্রতিরোধ কর্মসূচিতে জোর দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুরসভার উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে এক যোগে চলছে কর্মসূচি। বিভিন্ন ড্রেন ও জলাশয়গুলিতে ছাড়া হচ্ছে গাপ্পি মাছ। মশার লার্ভা দমনে এই মাছ বড় ভূমিকা রাখে। জন্মাবার সঙ্গে সঙ্গেই মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে এই বিশেষ প্রজাতির মাছ। পাশাপাশি নিয়মিত ওয়ার্ডগুলিততে সাফাই কর্মসূচিও চলছে। স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন কিনা তার খোঁজ রাখছেন। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল জানালেন, ডেঙ্গি নিয়ে গত জুন মাস থেকে লাগাতার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি তাঁদের দল যাচ্ছে। খোঁজ-খবর নিচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্যের বিষয়ে। পাশাপাশি পৌর এলাকায় গাপ্পি মাছও ছেড়েছেন।
ভিলেজ রিসোর্স পার্সন রীনা মুন্ডা জানাচ্ছেন, তাঁরা এলাকার সমস্ত বাড়ি ঘুরে পরিস্থিতি দেখবার পাশাপাশি ডেঙ্গির সচেতনতা প্রচার চালাচ্ছেন। এলাকাবাসী সন্তোষ রায় বলছেন, তাঁর বাড়িতে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন এসেছিলেন। তাঁর বাড়িতে কেউ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। একইসঙ্গে বাড়িতে জল জমে আছে কি না তা দেখে গিয়েছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার বলছেন, “ডেঙ্গি মোকাবিলায় আমরা এ বছর অনেক আগে থেকেই কাজ শুরু করেছি। তাই এবারে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। গোটা জেলার ডেঙ্গি পরিস্থিতি গতবারের তুলনার অনেক ভাল রয়েছে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯। কারও মৃত্যুর খবর মেলেনি।”
স্বাস্থ্য দফতরের ক্যালেন্ডারের হিসাব বলছে, জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস মশা বাহিত রোগের মাস হিসেবে চিহ্নিত। বছরের এই সময় ডেঙ্গি,ম্যালেরিয়ার মতো মশা বাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ে। গত বছর এপ্রিল মাস থেকে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলায়। বছর শেষে গিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৯০৮। ডেঙ্গি রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ২ জনের।