জলপাইগুড়ি: লক্ষাধিক টাকা দিয়েও হাতে আসেনি বিল্ডিং প্ল্যান। পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের ভুক্তভোগীর। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আসরে নামল বিজেপি (BJP)।
বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করিয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পৌরসভার এক মহিলা ইঞ্জিনিয়রের বিরুদ্ধে। প্রতারিত মহিলা কোতোয়ালি থানা এবং পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনা সামনে আসতেই সাংবাদিক সম্মেলন করে পৌরসভার বিরুদ্ধে তোপ দাগলো বিজেপি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন চেয়ারম্যান।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ৩ নং ঘুমটি এলাকার বাসিন্দা বয়স্কা মহিলা শকুন্তলা দত্ত। তিনি তাঁর বাড়ি তৈরি করবেন বলে চলতি বছরের মে মাসে পৌরসভায় যান। এরপর পৌরসভা থেকে তাকে বলা হয় বাড়ি বানাতে গেলে বিল্ডিং প্ল্যান বানিয়ে সেই প্ল্যান পৌরসভা থেকে পাশ করাতে হবে। তারপর উনি বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবেন। এই কথা শুনবার পর তিনি পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার মধুশ্রী দাসের সাথে যোগাযোগ করেন।
শকুন্তলা দেবীর মেয়ে রোশনি মিত্র অভিযোগ করে জানান, তাঁর মা পৌরসভায় গিয়ে মধুশ্রী দাস নামে মহিলা ইঞ্জিনিয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর বাড়িতে সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিশ্বজিৎ নামে আরও দুই ব্যাক্তিকে নিয়ে যান। তাঁরা দাবি করেন বিল্ডিং প্ল্যান বানিয়ে পাশ করাতে গেলে ১ লক্ষ টাকা লাগবে। এরপর মা তাঁদের দু দফায় ৫০ হাজার টাকা দেন। তারা একটি কম্পিউটারে তৈরি করা বাড়ির নকশার কাগজ ধরিয়ে দেন। যেই কাগজে পৌরসভার কোনও আধিকারিকের সই বা সিল দেওয়া নেই। এইভাবে প্রায় ছমাস পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তাঁদের বৈধ প্ল্যান দেওয়া হয়নি। সেই কারণে ১ লক্ষ টাকা ফেরতের দাবি জানান । তাই তাঁরা থানা ও পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌরসভার কর্মীরা বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করবার নামে টিম গঠন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। একটা বড়সড় চক্র এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর এদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। একটি ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের হল। ভাল ভাবে খোঁজ নিলে আরও অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। আমরা চাই পৌরসভা অবিলম্বে তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিক। নইলে আমরা পৌরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাব।’
অপরদিকে, তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মধুশ্রী দাস। তিনি বলেন, ‘শকুন্তলা দেবী অফিসে আমার কাছে এসেছিল। বিল্ডিং বানাবেন বলে ইঞ্জিনিয়রের সাহায্য চান। তখন আমার সামনে যারা ছিল তাদের সাথে কথা বলিয়ে দিই। এরপর উনি কাগজপত্র দেখাবেন বলে আমাকে তার বাড়িতে যেতে বলেন। আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি কাউকে আমার সাথে নিয়ে যায়নি। আর আমি কোনও টাকাও নিইনি।’
ঘটনায় জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল বলেন, ‘এখন পৌরসভার বিল্ডিং প্ল্যান অন লাইনে করা হয়। যদি সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকে তবে তা দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এই ধরনের কোনও অভিযোগ আমি এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’