ধূপগুড়ি : বাবা-মেয়ের সম্পর্ক অত্যন্ত পবিত্র। বয়স যতই বাড়ুক সন্তানকে বাবা আগলে রাখবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই বাবার রাগ যদি এত বেশি হয়ে যায় যে, মেয়েও তার থেকে ছাড় পায় না, তাহলে তার প্রভাব হতে পারে ভয়ঙ্কর। আর সেই ছবিই দেখা গেল ধূপগুড়িতে। রাগের বশে মেয়েকে এমন মারধর করলেন বাবা যে তার বাঁচানোই গেল না মেয়েকে। অশান্তি তো সব পরিবারেই হয়, কিন্তু কি এমন অশান্তি হল যে মাথায় খুন চেপে গেল! সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না প্রতিবেশীরা।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির মল্লিকশোভার ঘটনা। মৃতের নাম ললিতা পাল, বয়স আনুমানিক ১৮ । ধূপগুড়ি ব্লকের মল্লিকশোভা এলাকার ঘটনায়। বাবার মারে মৃত্যু হয়েছে ললিতা পাল নামে ১৯ বছরের কিশোরীর।
ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন অভিযুক্ত নিরঞ্জন পাল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ঘটনার পর থেকে তাঁকে খোঁজা হয়েছে আশেপাশে। কোথাও দেখা মেলেনি তাঁর। অবশেষে শুক্রবার তাঁকে পাশের গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবারই তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাড়িতে অশান্তি আবহ ছিল। কখনও বাবা- মেয়ে, কখনও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ঝাটি চলছিল। এরপর বিকেলে আচমকাই নিরঞ্জন পালের ছেলে সুব্রত-র কান্নাকাটি শুরু করে। তার কান্না শুনে ছুটে আসেন সুব্রতর কাকিমা। এরপর ঘরে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে ললিতা। তাকে ধরে রেখেছে তার এক খুড়তুতো ভাই। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা ললিতাকে টোটোতে করে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতের ভাই সুব্রত জানিয়েছে, বাড়িতে মাঝেমধ্যেই অশান্তি লেগে থাকত। কারণ মাকে বিনা কারণে মারধর করতেন বাবা। সুব্রত জানিয়েছেন, দিদি ঘরের মধ্যে ঘুমোচ্ছিল। হঠাৎ চেঁচামেচি শুনে ঘরে ঢোকে সুব্রত। সে যখন দিদিকে দেখে, তখন দিদির অবস্থা প্রায় শেষ। ললিতার ছোট ভাই বলছে, ‘দিদিকে বাবাই মেরেছে। কী দিয়ে মেরেছে দেখিনি।’
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, কোনও খাবার জিনিস বাড়ির বাইরে রেখেছিল ললিতা। আর সেটা দেখেই রেগে আগুন হয়ে যান তাঁর বাবা। এরপর ঘুমন্ত মেয়েকে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করতে থাকে। আর তাতেই সম্ভবত মৃত্যু হয়েছে ললিতার।