শিলিগুড়ি: ২০০১ সালে কোনও এক অজানা রোগে আচমকাই পরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছিল শিলিগুড়িতে। কয়েকদিনের মধ্যে এক চিকিৎসক সহ ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেই বছর, যার কোনও ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি চিকিৎসকেরা। ঘটনার ৭ বছর পর জানা যায়, ওই ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল নিপা ভাইরাসে। ২২ বছর কেটে গিয়েছে। এবার ফের বাড়ছে আতঙ্ক। সম্প্রতি কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিপা আক্রান্ত সন্দেহে এক ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন। এরপর উত্তরবঙ্গে ফের বেড়েছে আতঙ্ক।
সারা বছর বিভিন্ন রাজ্যের তথা দেশের মানুষ শিলিগুড়িতে যান পর্যটনের সূত্রে। তাই ভাইরাস ছড়ানোর আতঙ্কও সবসময় বেশি থাকে। তবে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে সবরকম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। বর্ষা শেষ হওয়ার পথে, তাই শুরু হচ্ছে পর্যটনের মরসুম। তাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভিআরডিএল ল্যাবের প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর অরুণাভ সরকার জানান, ২০০১ সালের পর শিলিগুড়িতে আর নিপা ভাইরাসের দেখা মেলেনি৷ মূলত পরিযায়ী শ্রমিক ও পর্যটকদের মাধ্যমে এই ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। অরুণাভ বাবু বলেন, “আমরা চাইছি জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে আসুন। কোন ভাইরাসের কারণে জ্বর হয়েছে, তা চিহ্নিত করা হোক। পাশাপাশি ফল খাওয়ার সময় তা ভাল করে পরিষ্কার করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
২০০১-এ শিলিগুড়িতে যে চিকিৎসকেরা চিকিৎসা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম সুবল দত্ত। তাঁর দাবি, ভাইরাস ছড়ায় অত্য়ন্ত দ্রুত। তাই জ্বর হলে ফেলে রাখা যাবে না। দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, “কোভিডে আমরা সবাই যেভাবে লড়াই করেছি, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একটি আইসোলেশন ভবন ভাইরাল জ্বরের চিকিৎসার জন্য রাখা আছে।” তিনি জানান, যে বিশাল সংখ্যায় পর্যটক আসছেন তাঁদের প্রত্যেকের ওপর নজর রাখা সম্ভব না হলেও জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসায় নজর দেওয়া হচ্ছে।