জলপাইগুড়ি: তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ায় ফুলে উঠল জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহর চিড়ে চলে যাওয়া করলা নদী। প্লাবিত নদীর দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় ঘড় ছেড়ে ফ্লাড শেল্টারে ঠাঁই নদীপাড়ের বাসিন্দাদের। প্রসঙ্গত, গত দু’দিনে সিকিম পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টিতে জল বেড়েছে তিস্তা নদীতে। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। একইসঙ্গে তিস্তা নদীর সমস্ত লক গেটগুলি খুলে আবার দফায় দফায় জল ছাড়া হয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, এদিন সকালে ৬০০০ কিউমেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। রাতে ছাড়া হয়েছে ৪০০০ কিউমেকের বেশি জল।
লাগাতার এই জল ছাড়ার প্রভাব পড়েছে জলপাইগুড়ি শহর চিড়ে চলে যাওয়া করলা নদীতে। জল বেড়ে যাওয়ায় জলমগ্ন হয়েছে শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দিরা কলোনি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অংশ, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অংশ। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে পরেশ মিত্র কলোনি এবং নীচ মাঠ এলাকা। ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
শুক্রবার দুপুরের পর থেকে করলা নদীর জল ঢুকে পড়ে জলপাইগুড়ি শহরের নেতাজিপাড়া ও পরেশ মিত্র কলোনি এলাকায়। করলা নদীর পাশে বাঁধ না থাকায় এই দুর্ভোগ বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
২৫ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তত দেড় শতাধিক বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই তারা বাড়িঘর ছেড়ে ফ্লাড শেল্টারে চলে এসেছেন। এছাড়া জলমগ্ন অন্যান্য এলাকার অনেক মানুষ উচুঁ রাস্তার ধারে আশ্রয় নিয়েছেন। খবর পেয়ে রাতেই ওই এলাকা গুলিতে টিম নিয়ে চলে যান চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল।
স্থানীয় বাসিন্দা মিষ্ঠু ভুইয়া বলেন, “দুপুরের পর থেকে জল বাড়তে শুরু করল। সমস্যায় পড়ে গেল নদীপাড়ের বাসিন্দারা।” দীপালী দাস নামে স্থানীয় বাসিন্দা ক্যামেরার সামনে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, “এটা আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরা বারবার এখানে বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়ে আসছি। সবাই আশ্বাস দেয় কিন্তু আজও বাঁধ হয়নি। তাই আজকেও একই অবস্থা। রাতে ঘরে জল ঢুকে গেলো। এখন বাধ্য হয়ে ফ্লাড শেল্টারে এলাম।আমাদের কাউন্সিলর রাতের খাবারের ব্যাবস্থা করেছে। বাড়িতে রান্না করতে পারিনি। তাই এখানে খাবার নিতে লাইনে দাঁড়ালাম।”
২৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পৌষালি দাস বলেন, “আমরা ফ্লাড শেল্টার খুলে দিয়েছি। শেল্টারে মানুষ উঠেছে। আমরা পানীয় জল, রাতের খাবারের ব্যাবস্থা করেছি।”
জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল বলেন, “প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি তিস্তা থেকে জল ছাড়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের জানানোর পর আমাদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম ওয়ার্ডগুলিতে নেমেছে। ওই এলাকার মানুষের দাবি রয়েছে বাঁধ নির্মানের। সম্প্রতি সেচ মন্ত্রী এসেছিলেন। আমরা তাকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনি আমাদের আশ্বস্তও করেছেন। আশা করছি পুজোর পর কাজ শুরু হবে।”