জলপাইগুড়ি: দলছুট হাতির হামলায় মৃত্যু হল এক গ্রামবাসীর। ঘটনায় আতঙ্কিত তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। মৃতের নাম নীলকান্ত ওঁড়াও।
হাতির করিডর দখল করে তিস্তার চর জুড়ে মানুষের বসতি। হাতিদের বিচরণ ভূমি দখল করে চাষ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই মুহূর্তে তিস্তার চরে রয়েছে পাকা ধান ও প্রচুর শাক সবজি। আর সেইসব খাবার লোভে প্রতিদিন রাত হলেই বৈকন্ঠপুর জঙ্গল ছেড়ে ওই এলাকাগুলিতে হানা দিচ্ছে প্রায় ৬০-৭০ টি হাতির একটি দল।
বৃহস্পতিবার রাতেও দলটি হানা দিয়েছিল। ক্রমেই শহরমুখী হচ্ছিল দলটি। খবর পেয়ে আসে বন দফতর। হাতির দলটিকে তাড়াতে শুরু করলে দল থেকে কোনওভাবে একটি হাতি দলছুট হয়ে বৈকন্ঠপুর জঙ্গল সংলগ্ন দেউনিয়া পাড়া গ্রামে ঢুকে যায়।
রাস্তার ধারেই থাকা নীলকান্তের বাড়িতে ঢুকে যায় হাতিটি। নীলকান্ত সেসময় ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থাতেই হাতির পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নীলকান্তর।
খবর পেয়ে বৈকন্ঠপুর বন বিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জের বন কর্মীরা পৌঁছে হাতিটি তাড়া করে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেন। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন তাঁরা।
মৃতের ভাই মঙলু বলেন,”জঙ্গলে খাবার নেই। গ্রামে প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। তাই খাবারের লোভে হাতি জঙ্গল ছেড়ে গ্রামে হানা দিচ্ছে। এই বছর প্রচুর হাতি গ্রামের দিকে চলে আসছে। গতকাল রাতেও একটি বড়সড় দল গ্রামে এসেছিল। সেই হাতি আমার দাদাকে পিষে মারল। আমরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ চাই। চাকরি চাই।”
ঘটনায় রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত বলেন, “আগে এই এলাকায় এত হাতির উপদ্রব ছিল না। কিন্তু দিনে দিনে হাতির করিডর দখল করে বাড়িঘর বানিয়ে চাষ শুরু করেছে। যার ফলে জঙ্গল লাগোয়া তিস্তা নদীর এই সমস্ত এলাকায় হাতির হানা বেড়েছে। গতকাল রাতে হাতির হানায় এক বয়স্ক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের একজনকে চাকরি দেব। এইসময় এখানে ৬০-৭০ টি হাতির দল রয়েছে। কিন্তু তিস্তার চর দখল করে প্রচুর মানুষ রয়েছে।”