ধূপগুড়ি: হাড়হিম করা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের হাতেনাতে ধরে আংরাভাসার রাজুই এখন এলাকার হিরো। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বানারহাট ব্লকের ধূপগুড়ি থানার আংরাভাসায় কুপিয়ে খুন করা হয় মেহতাব আলমকে (৩৮)। ঘটনায় জখম হন মেহতাবের স্ত্রীও। রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। এদিকে মেহতাবকে মেরে পালানোর চেষ্টা করছিলেন অভিযুক্তরা। রাজু ইসলামের সামনে পড়ে যান। এরপরই বুদ্ধির জোরে ছ’জনকে ধরে ফেলেন তিনি। চারজন ছেলে, দু’জন তরুণী। মেহতাবকে খুনের পর অভিযুক্তরা জাতীয় সড়ক ধরে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। পায়ে হেঁটে পালাচ্ছিলেন তাঁরা। এদিকে রাজু এলাকার লোকজনের সঙ্গে মেহতাবের জখম স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গ্রামে ফেরার পথে চারজনকে দেখে সন্দেহ হয়। এরপরই হইহই করে ধাওয়া দেন রাজু ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন। ভয়ে পড়ি কী মরি করে অভিযুক্তরা পালানোর চেষ্টা করলে একটি দোকান ঘরে বন্দি করে ফেলেন তাঁদের। এরপর গ্রামের লোকেরা আসেন। আসে পুলিশও। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের।
কীভাবে রাজুর এই সাফল্য? নিহত মেহতাবের স্ত্রীকে আহত অবস্থায় ভোরে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন রাজু ও তাঁর দুই বন্ধু। হাসপাতালে ভর্তির সময় তাঁর কাছ থেকেই অভিযুক্তদের বিবরণ শুনেছিলেন। ওই মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর স্থানীয় দেওমালি এলাকায় চা খেতে দাঁড়ান রাজুরা। সেইসময় চার পাঁচজন হেঁটে দেওমালি এলাকা দিয়েই যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে নিহতের স্ত্রীর দেওয়া বিবরণ মিলে যায়। এরপরই হাতেনাতে ধরে ফেলেন। খবর দেন থানায়।
রাজু জানান, ওই যুবকদের প্রশ্ন করতেই ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন দুষ্কৃতীরা। তখন তার সন্দেহ আরও গভীর হয়। এই ঘটনায় এখনও অবধি ৬ জনকে ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চক্রবর্তী বলেন, এই ধরনের ঘটনায় মানুষ ঘাবড়ে যায়, ভয় পেয়ে যায়। তবে রাজু যেভাবে সাহস এবং উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন তা কথায় বোঝানো যাবে না। রাজুকে কুর্নিশ জানাতেই হয়। রাজুর প্রশংসায় পুলিশও। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার উমেশ খাণ্ডেওয়াল বলেন, কিছু স্থানীয় লোক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে সাহায্য করেছেন। এটা প্রশংসনীয়।