জলপাইগুড়ি: কতটা নির্মম মানসিকতা হলে এ ধরনের ঘটনা এখনও ঘটে এই সমাজে। জলপাইগুড়ির ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে দেখিয়ে দিল সেইটাই। এক পথশিশু বিরিয়ানির অর্ডার ক্যান্সেল করেছিল। আর সেইটাই তার অপরাধ। অভিযোগ, ওই নাবালককে মেরে তার ভেঙে দিলেন দোকানের কর্মীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরের কদমতলা মোড় এলাকার ঘটনা। এক রেস্টুরেন্টে বিরিয়ানির অর্ডার দেয় এক বছর দশের পথ শিশু। অর্ডার দেওয়ার পরে সে বুঝতে পারে তার কাছে টাকা কম আছে। তাই দোকান কর্মীরা বিরিয়ানি নিয়ে আসলেও সে খেতে অস্বীকার করে। এরপর দোকান ছেড়ে বেরিয়ে যায়। তার পিছু ধাওয়া করেন দোকান কর্মীরা। তাঁকে ধরে ফেলে। অভিযোগ, মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে তাঁর দাঁত ভেঙে দেয়।
শিশুটির চিৎকার শুনে ছুটে আসে পথ চলতি মানুষ ও স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা। তাঁরাই তাকে উদ্ধার করে। এরপর খবর পেয়ে আসে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও স্থানীয় এক মহিলা সমাজকর্মী। শিশুটিকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান সমাজকর্মী। দোকানের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রোহিত মৈত্র নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “আমি মন্দিরের সামনে দিয়ে আসছিলাম। দেখি বাচ্চাটাকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হচ্ছে। এরপর আমরা সকলে মিলে আটকাই। জানতে পারি বাচ্চাটি বিরিয়ানির অর্ডার ক্যানসেল করায় তাঁকে এভাবে মারা হচ্ছে। অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা।” জলপাইগুড়ি চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সম্পাদিকা মধুমিতা দাস। তিনি জানান, ঠশিশুটির পরিবারের তেমন কেউ নেই। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল সংলগ্ন এলাকায় তাঁর বাড়ি। মাঝেমধ্যেই এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়। আমরা তাঁর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি কেন সে এভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাও খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।” দোকান মালিক বিজন চন্দ বলেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ঘটনার সময় তিনি দোকানে ছিলেন না। অল্প সময়ের জন্য তিনি দোকানের বাইরে গিয়েছিলেন। এরমধ্যে তার দোকানের কর্মীরা দোকানের বাইরে গিয়ে খুব বাজে ঘটনা ঘটালো। লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।” পুলিশ আধিকারিক শ্যামল রায় বলেন, “খবর পেয়ে আমি এসে দেখি বাচ্চাটি দোকানে বসে আছে। দেখি দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর বাচ্চাটিকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”