জলপাইগুড়ি: বন্ধ হয়ে আছে জলপাইগুড়ির রানিনগরে ইন্ডিয়ান অয়েল LPG বটলিং প্ল্যান্টে লরি চলাচল। ফলে প্ল্যান্টে বন্ধ হয়ে রয়েছে ফাঁকা গ্যাস সিলিন্ডার ঢোকা। এর জেরেই রান্নার গ্যাস রিফিলিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে গ্যাস বোঝাই সিলিন্ডার আর পৌঁছাবে না ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে। আর এর জেরে চরম ভোগান্তিতে পড়তে চলেছে উত্তরবঙ্গে থাকা ইন্ডিয়ান ওয়েলের অন্তত ১ কোটি গ্রাহক।
তৃণমূল ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্টেট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের অ্যাডভাইজার কৃষ্ণ দাসের অভিযোগ, ট্রান্সপোর্ট মালিকেরা পিএফ এবং ইএসআই এর অর্থ প্রদান না করার কারণে গাড়িচালকদের এই বিক্ষোভ। গত পাঁচ বছর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। ইএসআই এবং পিএফ গাড়িচালকদের দিতে হবে এ নিয়ে একটি চুক্তিপত্র করা হয়। সেখানে এইসব সুবিধার কথা উল্লেখ ছিল। পাঁচ বছর আগের চুক্তি আজ থেকে দু মাস আগে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে চুক্তি হয়নি। ফলে গাড়ি চালকদের কোনও নিরাপত্তা নেই। তাই অবিলম্বে চুক্তি করতে হবে। বর্তমানে একজন গাড়ির চালক গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে পড়ে রয়েছে, অপর একজন দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে তারা কোনও সহযোগিতা পায়নি।
তবে কৃষ্ণ দাসের এই সংগঠন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন অনুমোদিত নয় বলে টেলিফোনে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া। তাঁর দাবি, ওই সংগঠন ভুয়ো। কেউ একজন নিজের স্বার্থপূরণের জন্য এই ধর্মঘট করেছে। তাই তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
পাল্টা সুর চড়িয়েছেন কৃষ্ণ দাসও। তাঁর বক্তব্য, তাঁদের ইউনিয়ন আইন মেনেই করা হয়েছে। তাঁরা শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ করেন। মালিক পক্ষের হয়ে দালালি করেন না। তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নবীন চৌধুরী। তাঁর দাবি, পিএফ, ইএসআই ইত্যাদি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।
গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক সরকার বলেন, উত্তরবঙ্গে অন্তত ১ কোটি গ্রাহক রয়েছেন। এখানে প্রতিদিন ৪০ হাজার সিলিন্ডার রিফিল হয়। সঙ্গে সঙ্গে তা বেরিয়ে যায়। কিন্তু গতকাল বিকেল থেকে ফাঁকা সিলিন্ডার বোঝাই গ্যাসের গাড়িগুলি প্ল্যান্টে যেতে না পারায় রিফিলিং বন্ধ। ফলে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে গ্যাস ডিলারদের ঘরে যাচ্ছে না। সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে মানুষজনদের। তৃণমূলের এক দাদার নির্দেশে এইসব হচ্ছে। এর আগেও কয়েকবার এই প্ল্যান্ট বন্ধ ছিল। তাই বিষয়টি নিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করছি। প্ল্যান্ট ম্যানেজার জি এস সুধাংশু জানিয়েছেন, গ্যাস সিলিন্ডার না আসায় তাঁরা রিফিলিং করতে পারছেন না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে তিনি ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে চাননি।