জলপাইগুড়ি: স্বামীর মৃত্যু হয়েছে আগেই। বিষয় সম্পত্তি নিয়ে তারপর থেকেই ছেলে-বৌমা অশান্তি শুরু করেন। মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে ছেলে বৌমার চিৎকার শুনতে পেতেন প্রতিবেশীরা। মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আগেই ছিল। এবার প্রচণ্ড শীতের মধ্যে মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির পুঁটিমারি এলাকায়। ঠান্ডায় দীর্ঘক্ষণ খোলা আকাশের নীচে বসে ছিলেন ওই বৃদ্ধা। প্রতিবেশীরা দেখতে পেয়ে পরে তাঁকে আশ্রয় দেন। ইতিমধ্যেই ছেলের বিরুদ্ধে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুঁটিমারি এলাকার বাসিন্দা মালতী বর্মন নামে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। তারপর থেকে দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য ছেলেই ছিল তাঁর ভরসা। কিন্তু বাড়িতে ছেলের দ্বারা অত্যাচারিত হতে থাকেন তিনি। এরপর বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করা, পরিচারিকার কাজ করা শুরু করেন তিনি। অভিযোগ, এক চিলতে বাড়ির জন্য মায়ের ওপর অত্যাচার করতে থাকেন ছেলে। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এর আগেও মাকে একাধিকবার মারধর করেছেন তাঁর ছেলে।
দিন দিন সেই অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছিল। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বৃদ্ধার বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু একান্ত পারিবারিক বিবাদ ভেবে প্রথমটায় বিশেষ আমল দেননি তাঁরা। তারপর একটা সময়ে চিৎকার চেঁচামেচি থেমে যায়। বিষয়টা মিটে গিয়েছে বলে ভাবেন প্রতিবেশীরা। অনেকটা রাতে হঠাৎই তাঁরা দেখতে পান, বাড়ির বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডার কেবল একটা চাদর গায়ে বসে রয়েছেন বৃদ্ধা।
বৃদ্ধার সারা শরীরে মারের আঘাতে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধা মহিলা বর্তমানে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এই বিষয়ে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ জমা করেছেন বৃদ্ধা মহিলা। বৃদ্ধা বলেন, “ওই খেতে চাই বলেই মারে। আমি কাজ করি। তবুও খাবার পাই না।” ঘটনার পর থেকে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন অভিযুক্ত ছেলে।