কমলেশ চৌধুরী
জলপাইগুড়ি: দক্ষিণবঙ্গ থেকে রেমাল সরেছে। তবে এখন ভুগছে উত্তরবঙ্গ। রেমালের প্রভাবে সিকিম পাহাড়ে চলছে ভারী বৃষ্টি চলছে। এর জেরে মঙ্গলবার রাত্রিবেলা থেকেই তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। কোনও রকম বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক করা শুরু করেছে প্রশাসন।
এ দিকে, আবার আগামী পাঁচদিন উত্তরের তিন জেলা অর্থাৎ আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে বৃষ্টির ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার আবার আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। শুধু তাই নয়,আগামিকাল ও শুক্রবার দার্জিলিং, কালিম্পংয়েও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর বৃষ্টির জেরে তিস্তায় জল বাড়তে শুরু করেছে। জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। অপরদিকে, তিস্তা পাড়ে আটকে একাধিক পর্যটক। সন্ধ্যেবেলা তাদের বাইরে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে।
পাহাড়ে কি তবে বন্য়া পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে?
গত বছরের অক্টোবর নাগাদ সিকিমের গ্লেসিয়ার লেক লোনাকের উপর মেঘ ভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। যার জেরে তিস্তা নদীতে আসে হড়পা বান। মৃত্যু হয় একাধিকের। সেই সময় প্রচুর পরিমাণে পলি-বালি-মাটি নিয়ে তিস্তার জল নেমে আসে সমতলে। নদীর নাব্যতা কমে যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় এভাবে বৃষ্টি পড়লে দুকূল ছাপিয়ে উপচে পড়বে জল। ভাসতে পারে তিস্তার পাড়ে থাকা গ্রামের পর গ্রাম। ভাঙতে রাস্তা। তৈরি হতে পারে বন্যা পরিস্থিতি।
কী বলছে স্থানীয় প্রশাসন থেকে জনগণ?
ইতিমধ্যেই তিস্তা নদী পাড়ে থাকা রাজগঞ্জ,জলপাইগুড়ি সদর ও ময়নাগুড়ি এই তিন ব্লকের নদী পার লাগোয়া বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর মহকুমাশাসক তমজিৎ চক্রবর্তী। তবে সব হারানোর ভয় কুড়ে-কুড়ে খাচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের। বিবেকানন্দ পল্লীর পঞ্চায়েত সদস্য জয়া সরকার বিশ্বাস বলেন, “রাত থেকে জল বাড়তে শুরু হয়েছে। সকালেও জল বাড়ছে। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের জলে নামতে বারণ করা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে মাইকিং শুরু করেছি।” জেলাশাসক শামা পারভিন জানিয়েছেন, “তিস্তায় জলস্তর বাড়লেও তা নিয়ে অযথা আতঙ্কের কারণ নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।”