জলপাইগুড়ি: একের পর এক উল্লেখযোগ্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আম-জনতার একাংশ থেকে চাকরিপ্রার্থী যাঁরা তাঁকে ঈশ্বরের ন্যায় সম্মান করেন। কলকাতা হাইকোর্টের সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ( Justice Abhijit Gangopadhyay) দেখা গেল এবার ভিন্ন মেজাজে। এবার আর ‘কঠীন’ সেই বিচারপতি নন, একদম নিপাট সাধারণ মানুষের মতো রেস্ট্রুরেন্টের চেয়ারে বসে একটার পর একটা মোমো খেলেন তিনি।
এই মুহূর্তে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি শহরের একটি ক্যাফেতে এসে খানিকটা সময় কাটিয়ে গেলেন তিনি। মূলত, এই ক্যাফেতে সুস্বাদু খাবার খাওয়ার পাশাপাশি গানবজনা সবটাই করা যায়। একই সঙ্গে জনসাধারণ চাইলে সেখানকার লাইব্রেরিতে বসে বইও পড়তে পারেন। জলপাইগুড়ির নতুন প্রজন্মের কাছে এই ক্যাফে অত্যন্ত প্রিয়।
বুধবারও যথারীতি শীতের সন্ধ্যায় ক্যাফেতে বসে চা-কফিতে বসে চুমুক দিচ্ছিলেন অনেকে। কিন্তু আচমকা পড়ে গেল হইহই। এ কী! কাকে দেখছেন তাঁরা! নিজের চোখকেই যেন প্রথমে বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলেন না ওই ক্যাফেতে আসা মানুষজন থেকে সেখানকার কর্মীরা। রেস্তোঁরায় এসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমে টেবিলে বসেন। তারপর মেনু কার্ড দেখে সেখানকার ফ্রাই মোমো অর্ডার দেন। এরপর তিনি সেখানকার লাইব্রেরিতে রাখা বইগুলি নেড়েচেড়ে দেখেন। কিছুক্ষণ পর অর্ডার সার্ভ করা হলে তিনি টেবিলে বসে ফ্রাই মোমো খান।
এ দিকে, বিচারপতি দেখে তাঁর সঙ্গে সেলফিও তুলতে চান অনেকে। যদিও তাঁদের নিরাশ করেননি বিচারপতি। এরপর অনেকের সাথে ছবি তোলেন। পরে বিল মিটিয়ে দিয়ে চলে যান। গতকাল প্রায় ৪০ মিনিটের মতো তিনি সেখানে ছিলেন।
হোটেলের ফ্লোর ম্যানেজার শ্রীবাস সরকার বলেন, “ব্যাপারটা আমাদের কাছে সারপ্রাইজের মতো। কারণ উনার মতো একজন বিশিষ্ট মানুষ আমাদের এখানে আসবেন তা আমরা কোনও দিন ভাবতেই পারিনি। পাশাপাশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের তরফে আমাদের এখানে আগাম টেবিল বুক করা ছিল না। বা উনি আমাদের এখানে আসবেন বলে কেউ জানায়নি। ফলে ওনাকে দেখে আমরা প্রথমে হকচকিয়ে যাই। বিষয়টি একদম স্বপ্নের মতো ছিল।”
এ দিন ওই সময় উপস্থিত ছিলেন পিযুস দাস নামে এক কর্মী। তিনি জানালেন, “যাকে আমরা টিভিতে খবরের শিরোনামে দেখে থাকি। আজ তিনি আমাদের এখানে আসবেন তা আমরা কোনওদিন ভাবতেও পারিনি। উনি আর দশটা সাধারণ মানুষের মতো মেনু দেখে ফ্রাই মোমো অর্ডার দিলেন। এরপর বই পড়লেন। খাবার সার্ভ করা হলে উনি খেলেন। তারপর বিল মিটিয়ে চলে যান। বিচারপতিকে আমরা অনুরোধ করলাম আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য। উনি রাজি হলেন।”