জলপাইগুড়ি: আলু চাষের জমি। আর সেখানেই ছড়িয়ে রয়েছে বড় বড় পায়ের ছাপ। ঝোপ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি খুবলে খাওয়া ছাগলও। চিতাবাঘের আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের তিস্তা পাড়ের একটি গ্রামে। গ্রামের নাম কঁচয়ুা বোয়ালমারি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার এলাকায় চিতাবাঘের (Leopard) উপস্থিতি টের পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এরপর ওই ছাগলের খুবলে খাওয়া দেহ দেখতে পেতেই আতঙ্ক আরও বাড়ে। ভয়ে তিস্তা পাড়ের ওই এলাকায় চাষবাস বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।
এদিকে এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্কের খবর পেয়ে শুক্রবার ওই গ্রামে যান বন দফতরের কর্মীরা। আলু চাষের জমি ঘুরে দেখেন তাঁরা। যে পায়ের চিহ্ন বা পাগমার্ক রয়েছে জমিতে, সেগুলি দেখে তাঁরাও একপ্রকার নিশ্চিত, ওগুলি চিতাবাঘের পায়ের ছাপ। জমিতে ফাঁদ পাতার সিদ্ধান্ত নেন বন দফতরের কর্মীরা। জানা গিয়েছে, প্রথমে গ্রামবাসীরা আলু চাষের জমিতে চিতাবাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান। এরপর এলাকারই এক মহিলা তাঁর বাড়ির গরু ও ছাগলকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য তিস্তা পাড়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমে ছাগলটির দড়ি একজায়গায় পুঁতে, গরুর দড়ির খোঁটা নদীর চরে পুততে যান। সেখান থেকে ফেরার সময় দেখেন, আর ছাগল নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুজির পর ঘাসজমি থেকে ছাগলটির খুবলে খাওয়া দেহ উদ্ধার হয়।
এলাকার এক যুবকের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেলে তিস্তা বাঁধের রাস্তা দিয়ে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় একটি বিশাল চিতাবাঘ দেখতে পেয়েছিলেন। সেটি তাঁর বাইকের সামনে দিয়ে লাফিয়ে দ্রুত বাঁধ পার করে ঘাসজমিতে চলে গিয়েছিল। সেই ছবিও যুবক তাঁর ফোনে ক্যামেরাবন্দি করেছিল। শুভাশিস সরকার নামে ওই যুবকের দাবি, ওটি যে একটি বড়সড় চিতাবাঘ, সেই ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। কারণ জন্তুটির গায়ের রং ছিল হলুদ। আর সারা গায়ে কালো ছোপ ছিল। এছাড়া তিনি যেহেতু একজন ড্রাইভার, তাই প্রায়শই পর্যটকদের নিয়ে জঙ্গল এলাকায় যান। সেখানে তিনি আগেও চিতাবাঘ দেখেছেন বলে দাবি শুভাশিসের।
রঞ্জিত সরকার নামে এলাকার এক কৃষক জানান, চিতাবাঘের আতঙ্কে চাষবাস বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। আতঙ্কে বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে এই গ্রামের কেউ ঘুমায়নি। ইতিমধ্যেই একটি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। চিতাবাঘের হানাতেই ওই ছাগলটি মরেছে বলে দাবি তাঁদের। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকা গ্রামবাসীদের দাবি, ওই চিতাবাঘটিকে দ্রুত ধরে নিয়ে যাক বনদফতর।