জলপাইগুড়ি: মুজিব সরকারের শতবর্ষে ভারত -বাংলাদেশ মৈত্রীর নতুন অধ্যায় শুরু হল। বুধবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের দিকে যাত্রা শুরু করল মিতালি এক্সপ্রেস। এ দিন রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মিতালি এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এই নতুন যাত্রাপথ বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতকে জুড়বে বলে জানানো হয়েছে রেল মন্ত্রকের তরফে। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের মানুষ অনেক কম সময়ে পৌঁছে যেতে পারবেন ঢাকায়। এর মাধ্যমে বাণিজ্যের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে। ভারত- বাংলাদেশের মধ্যে এটি পঞ্চম রেল যোগাযোগ। রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই ট্রেন চালু হওয়ায় দূরত্ব কমছে অন্তত ৭০০ কিলোমিটার, ৭ ঘণ্টা কম সময় লাগবে বাংলাদেশ পৌঁছতে। তাই এই দিনটিকে ঐতিহাসিক দিন বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।
ভারতে সীমান্তের শেষ স্টেশন হলদিবাড়ি এবং বাংলাদেশ সীমান্তের শেষ স্টেশন চিলাহাটি ছুঁয়ে যাতায়াত করবে এই মিতালি এক্সপ্রেস। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ দিন জানিয়েছেন, যাত্রী পরিষেবায় আপাতত সপ্তাহে দুদিন চলবে এই ট্রেন। তবে ভবিষ্যতে সপ্তাহে পাঁচ দিন সেই ট্রেন চালানোর প্রচেষ্টা চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, জনপ্রিয় ওই রুটে বহু মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। বাংলাদেশের মন্ত্রী আরও জানান, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে সিঙ্গল লাইন গুলি ডবল লাইন করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
এই ট্রেন চলায় আগের থেকে অনেক সুবিধা হল বলে জানিয়েছেন এক যাত্রী। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে জানিয়েছেন, কোভিডের জন্য এতদিন পর্যন্ত ওই ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি, এবার সেটাই চালু হল। নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, সীমান্ত পর্যন্ত ট্রেনে থাকবে বিএসএফ ও আরপিএফ। গন্তব্যে পৌঁছে ট্রেনটির ৯ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট লাগবে, যা আগের তুলনায় ৭ ঘণ্টা কম বলে জানাচ্ছেন রেল কর্তারায়। সেই সঙ্গে রেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে নিউ জলপাইগুড়িতে বিশ্বমানের স্টেশন তৈরি হবে।
জানা গিয়েছে, প্রতি বৃহস্পতিবার এবং রবিবার সকাল ১১ টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। হলদিবাড়ি এবং চিলাহাটি হয়ে এই ট্রেন পৌঁছবে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। হলদিবাড়িতে বিএসএফের উপস্থিতিতে ট্রেনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীবাহিনীর হাতে। ট্রেনে যাতায়াত করতে পারবেন মোট ৪৩২ জন যাত্রী। আটটি সিসিটিভি ক্যামেরায় চলবে নিরাপত্তাজনিত নজরদারি। চারটি ফার্স্টক্লাস ও চারটি চেয়ারকার নিয়ে চলবে ১০ কামরার এই আন্তর্জাতিক ট্রেন। তবে প্রথম দিন মাত্র ১৭ জন যাত্রী নিয়েই যাত্রা করেছে ট্রেনটি।