জলপাইগুড়ি: বুধবার থেকে পর্যটকদের জন্য তিন মাসের জন্য সমস্ত জাতীয় উদ্যান এবং সমস্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চল বন্ধ করা হল। প্রতি বছরের মতো এ বছরও আজ থেকে আর বন্যপ্রাণীদের দেখার বা ঘোরার সুযোগ উপভোগ করতে পারবেন না পর্যটকেরা।
বর্ষা ইতিমধ্যে এসে গিয়েছে রাজ্যে। উত্তরবঙ্গে এর জেরে বৃষ্টিও শুরু হয়ে গিয়েছে। বন্যপ্রাণীদের প্রজননকালীন সময় ধরা হয় ১৫ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়কে। পাশাপাশি এই সময় জঙ্গলে বর্ষার কারণে গাছপালা বেড়ে যায়। তাই পর্যটকদের ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকে। জঙ্গলের গভীরে যাতে বন্যপ্রাণীরা তাদের প্রয়োজনকালীন সময়ে কোনওভাবে বিরক্ত না হয় তার জন্যই জঙ্গলে প্রবেশ বন্ধ রাখা হয় বনদফতরের তরফে।
এই তিন মাস গোটা দেশের অন্যান্য বনাঞ্চলগুলির মত ডুয়ার্সের গোরুমারা জাতীয় উদ্যান, নেওড়াভ্যালি, চাপড়ামারি, জলদাপাড়া, বক্সা সহ সমস্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং জাতীয় অভয়ারণ্য বন্ধ করে দেওয়া হল পর্যটকদের জন্য। তিন মাস জঙ্গল বন্ধ থাকায় ডুয়ার্সের গরুমারা, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সহ চাপরামারি, বক্সা, চিলাপাতা এ সমস্ত বনাঞ্চলের গভীরে থাকা বনবাংলোগুলিতে পর্যটকরা থাকার সুযোগ পাবেন না। তাই পর্যটকরা এই তিন মাস বনবাংলোগুলিতে ইচ্ছে থাকলেও রাত কাটাতে পারবেন না। আজ থেকে জঙ্গলের গভীরে রাত্রিবাস, হাতির পিঠে সাফারি এবং জঙ্গল সাফারি বন্ধ হয়ে গেল।
আজ থেকে ফের জঙ্গলের গভীরে হাতি বাইসন,গন্ডার ময়ূর দেখার সুযোগ উপভোগ করতে পারবেন না। তাই পর্যটকদের মন কিছুটা ভার।
বিভিন্ন পর্যটন ব্যবসায়ীদের ও মন খারাপ।এই তিনমাস তাদের ব্যবসা বন্ধ। তাই বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনার পর কিছু বনদফতরে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই সময় খোলা থাকবে কালিকাপুর জঙ্গল ক্যাম্প, ধুপঝোরা ইকো টুরিজিম ক্যাম্প,পানঝোরা জঙ্গল ক্যাম্প, হর্নবিল জঙ্গল ক্যাম্প, টুকটুকি ওয়াচ টাওয়ার।পাশাপাশি খোলা থাকবে চাপড়ামারি গেট থেকে ওয়াচ টাওয়ার অবধি যাওয়ার রাস্তা, দক্ষিণ খয়েরবাড়ি টাইগার রেসকিউ সেন্টার, মন্দারমণি জঙ্গল ক্যাম্প। খোলা থাকবে বক্সা ফোর্ট। তবে একদম নিষেধ এলিফান্ট সাফারি। গরুমারা বন্য প্রানী বিভাগের বিভাগীয় বনাধিকারিক বলেন শুধু ইকো টুরিইজিম খোলা থাকবে। আর সব বন্ধ থাকবে।
যদিও বনদফতরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পরিবেশ প্রেমীরা। কারণ এই সময় টাকে বন্যপ্রাণীদের প্রজনন কালিন সময় ধরা হয়। সেই কারণে জঙ্গলে পর্যটকদের ঢোকার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা জরুরি বলে তারা মনে করেন। কারণ বন্যপ্রাণীরা যাতে কোনও ভাবে মানুষের জন্য বিরক্ত না হয় সেই কারণেই কিন্তু গোটা দেশজুড়ে জঙ্গে মানুষের প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।