নীলেশ্বর সান্যাল
কলকাতা ও হলদিবাড়ি: বাবা গত হয়েছে অনেকদিন হল। মা ভিক্ষুক। দু’বেলা ভিক্ষা করে যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে সংসার। ছেলে বিশ্বজিৎ বর্মণ ক্যাটারিং কর্মী। সোমবার তাঁদের বাড়িতেই এনআইএ পৌঁছতেই কার্যত মাথায় হাত প্রতিবেশীদের। ভিখারির বাড়িতে কী করছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা? এই প্রশ্নই যখন ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসীদের মনে। সেই সময় প্রকাশ্যে এল বড় খবর। দেশে প্রবেশ করেছে আলকায়দা জঙ্গি সংগঠন। আর গোয়েন্দাদের দাবি, এলাকার নিপাট ‘ভদ্র’ ছেলেটা কট্টরপন্থীদের এদেশে নিয়ে আসার চক্রের মিডলম্যান হিসেবে কাজ করে।
এনআইএ সূত্রে খবর, গত বছর ২০২৩ সালে আমেদাবাদে এটিএস তদন্তে নামে। সেই সময় ছ’জনকে গ্রেফতার করে এটিএস। তাঁরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক। ভুয়ো ভারতীয় নথিপত্র ব্যবহার করে থাকছিল এই দেশে বলে অভিযোগ। এদের জেরা করেই এটিএসের হাতে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাংলাদেশের বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে বা পাসপোর্ট ছাড়া ঢুকেছিল ভারতে। এদের সঙ্গে যোগ ছিল কট্টরপন্থী সংগঠনের। তদন্ত ভার যায় এনআইয়ের হাতে।
সেই তদন্তে নেমে দেখা যায়, অভিযুক্তরা অসম ও উত্তরবঙ্গ দিয়ে ঢুকেছে ভারতে। কট্টরপন্থী যোগ খুঁজতে গিয়ে এক মহিলা সহ দু’জনের নাম উঠে আসে। যারা উপমহাদেশে ‘আলকায়দার হ্যান্ডলার’। এদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। এদের বিরুদ্ধে এআইএ চার্জশিট দেয়। সেই সূত্রেই কোচবিহারে বিশ্বজিৎ বর্মণের বাড়িতে তল্লাশি।
যদিও সোমবার রাখি বলেন, “ওরা ঘরবাড়ি আমার বাক্সপ্যাঁটরা খুলে দেখল। স্বামীর ব্যাঙ্কের বই দেখল। ছেলে বাইরে কাজে গিয়েছে।” বাড়িতে ছিলেন না বিশ্বজিৎ। তাঁর মা রাখি বর্মণ জানিয়েছেন, ছেলে কাজের জন্য বাড়ির বাইরে গিয়েছে। তবে গোয়েন্দা আধিকারিকরা গোটা বাড়ি চিরুনি তল্লাশি করেছে। খুঁজে-খুঁজে দেখেছে সবটা।