এই গ্রামের ছেলেমেয়েদের বিয়ে করছে না কেউ, বিয়ের নাম শুনলেই ভয়ে বুক কাঁপছে সবার, পাকা হওয়া বিয়েও ভেঙে যাচ্ছে নিমেষে
Dhupguri: বিয়ে না হাওয়ার কারণটা জানলে কেউ কেউ হাসতে পারেন, তবে এই গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন। বিপাকে পড়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেখানে জানিয়েও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এখন অনেকেই গ্রাম ছাড়া।
ধূপগুড়ি: দর্শনে ও গুণ বিচারে তারা কারও থেকে মোটেই পিছিয়ে নেই, অন্য সমস্ত ছেলেমেয়েদের মতোই তারাও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথেষ্ট স্মার্ট। রীতিমতো শিক্ষিত। সংসার চালানোর মতো রোজগারও রয়েছে তাদের। তারপরও গ্রামের ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেই গ্রামের মানুষজনকে। কিন্তু কেন?
বিয়ে না হাওয়ার কারণটা জানলে কেউ কেউ হাসতে পারেন, তবে এই গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন। বিপাকে পড়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেখানে জানিয়েও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এখন অনেকেই গ্রাম ছাড়া।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের মরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত ধূপগুড়ি ব্লকের ঝাড় আলতা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভান্ডারকুড়া গ্রামে এই পরিস্থিতি।
কিছুদিন আগেই এলাকার যুবক সঞ্জীত রায়ের সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল আলতাগ্রাম এলাকার এক যুবতীর। বিয়ে ঠিক হওয়ার কয়েকদিন সঞ্জীতের মামা এবং পিসেমশাই যুবতীর বাড়িতে যান। কিন্তু ঘরের পিছনে পায়ের ছাপ দেখে ভয় পেয়েই বিয়ে ভেঙে দেন তাঁরা। এমন বহু ঘটনা রয়েছে এই গ্রামে। কারণ ওই পায়ের ছাপগুলো হাতির।
এমনও হয়েছে যে পাকাপাকিভাবে বিয়ের সমস্ত কথা হয়ে গিয়েছে, পাত্রীর বাড়ি থেকে ছেলের বাড়িতে এসেছে লোকজন। দিনক্ষণ ঠিক হবে এবার। আত্মীয়দের বরণ করতে আয়োজন করা হয়েছে এলাহি খাবার-দাবারের। ঠিক সেই সময় এলাকায় ঢুকে পড়েছে হাতির দল, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা গ্রামে। সবার সামনেই লন্ডভন্ড হতে থাকে একের পর এক বাড়ি ও চাষের ফসল। আর এই দৃশ্য দেখেই বারবার পিছিয়ে যায় বিয়ে।
হাতির এই যন্ত্রণা থেকে কবে মুক্তি পাবে এই গ্রাম? সেই সময়ের অপেক্ষায় গ্রামের মানুষ। প্রশাসনের কাছেও সমস্যার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। পাশের জঙ্গল থেকে যখন তখন বেড়িয়ে আসে হাতি, আর এই যন্ত্রণা প্রতিদিনের। হাতি গ্রামে ঢুকে ইচ্ছে মতো ভাঙে বাড়ি। তাইতো এই গ্রামে নিজেদের ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিতেও ভয় পায় অন্যান্য এলাকার বাসিন্দারা। তবে পুরোপুরি যে বিয়ে বন্ধ এ কথা বললে ভুল হবে। যাদের একটু সাহস রয়েছে যারা হাতির সম্পর্কে অবগত, তারাই বিয়ে করতে সাহস দেখাচ্ছেন এই গ্রামে।