জলপাইগুড়ি: নজরানা না দিলে মেলে না পরিষেবা। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা মাদার এন্ড চাইল্ড হাবে আসা এক প্রসূতি ও তাঁর পরিবারের লোকেরা তুলেছিলেন এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। শনিবার এই খবর সম্প্রচারিত হয় টিভি-৯ বংলায়। যা নিয়ে তোলপাড় জেলার রাজনৈতিক মহল। শোরগোল রাজনৈতিক মহলেও। সব পক্ষই অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন এই সমস্ত অভিযোগ আসছে দীর্ঘদিন থেকেই। তৃণমূল বিধায়ক ডাক্তার প্রদীপ কুমার বর্মা আবার করে ফেলেছেন চাঞ্চল্যকর দাবি। সাফ জানিয়েছেন, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে রোগী কল্যাণ সমিতিরই অস্তিত্ব নেই।
আমরা যোগাযোগ করেছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্রিন জলপাইগুড়ির সম্পাদক অঙ্কুর দাসের সঙ্গে। তাঁর বক্তব্য এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এই নিয়ে তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরে অনেকবারই স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তাই লিখিত অভিযোগ জমা পড়লেও উপযুক্ত তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিনা তা জানা যায় না। পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল মেরামত করা হবে এই অছিলায় একসময় প্রায় সমস্ত বিভাগগুলিকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এখানে রয়ে যায় শিশু বিভাগ ও ENT বিভাগ। যেহেতু বেশিরভাগ বিভাগ এখন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাই স্বাস্থ্য কর্তারা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বেশি নজর দেয়। তাই মাদার চাইল্ড হাবে নজরদারি কম।
তার দাবি, এখন জলপাইগুড়িতে যেহেতু মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়ে গিয়েছে তাই মেডিক্যাল কলেজের নতুন ভবন দ্রুত তৈরি করে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চলে যাওয়া সদর হাসপাতালের বিভাগগুলিকে পুনরায় সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করলে সমস্যা মিটতে পারে। তাতে স্বাস্থ্য কর্তাদের নজর আরও বাড়বে।
কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ। তিনি বলছেন, এই সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। তারাও এই সমস্যাগুলি নিয়ে বেশ কয়েকবার স্মারকলিপি দিয়েছেন। তিনি এও বলছেন, যেহেতু জলপাইগুড়ির সাংসদ একজন ডাক্তার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, তাই তাঁকে এই রোগী কল্যাণ সমিতিতে রাখা হোক। এই দাবি তাঁরা তুলেছেন। এরপরই শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলছেন, “তৃণমূল বিজেপি সাংসদকে রোগী কল্যাণ সমিতিতে রাখবে না। কারন রোগী কল্যান সমিতি ঘুঘুর বাসা। তাহলে তো দুর্নীতি ধরা পড়ে কাটমানি নেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। সেই ভয়েই বিজেপির লোকেদের সমিতিতে রাখা হয় না।”
আমরা যোগাযোগ করেছিলাম জলপাইগুড়ি বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক ডাক্তার প্রদীপ কুমার বর্মার সঙ্গে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি আবার বলছেন, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজের অধীনে আসার পর এখানে এখন রোগী কল্যাণ সমিতির আর কোনও অস্তিত্বই নেই। নতুন করে রোগী কল্যাণ সমিতি গঠন করা হবে কিনা তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছে। তবে তিনি এও বলছেন, অভিযোগের বিষয়টি তাঁরাও কানে এসেছে। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।