জলপাইগুড়ি : বৃষ্টি থেমেছে। কিন্তু, দুর্ভোগ কমেনি। এখনও শতাধিক বিঘা চাষের ক্ষেত জলের তলায়। এক হাঁটু জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষকে। জল-যন্ত্রণার এই ছবি ধূপগুড়ি ও ফালাকাটার।
টানা বৃষ্টির জেরে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলার একাধিক নদীতে। তিস্তা, জলঢাকা নদীতে হলুদ সংকেত জারি করে প্রশাসন। ডুডুয়া গিলান্ডি নদীর জল উপচে গ্রামে ঢুকে পড়ে। জলমগ্ন হয়ে পড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা। চাষের জমিতে জমে যায় জল। ধূপগুড়ি ফালাকাটা ব্লক লাগোয়া জুরাপানি এলাকাতেও ডুডুয়া নদীর জল ঢুকে পড়ে। এমনকি ডুডুয়া নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
গতকাল রাতেও টানা বৃষ্টি চলে ধূপগুড়ি, ফালাকাটায়। ভুটান পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে ধূপগুড়ি ব্লকে নতুন করে বৃষ্টি হয়নি। তবে পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে এখনও জলস্তর বাড়ছে নদীগুলিতে। ধূপগুড়ি ব্লক লাগোয়া ফালাকাটা ব্লকের গোয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিরকিটি এবং মুজনাই নদীর জলস্তর এখনও সম্পূর্ণ ভাবে কমেনি। বিরকিটি নদীর জল উপচে খিরেরকোট গ্রামে ঢুকে পড়েছে। জলের তলায় ভুট্টা ক্ষেত, সরিষা ক্ষেত থেকে শুরু করে পাট ক্ষেত। শয়ে শয়ে বিঘা চাষের ক্ষেত এখন জলের তলায়।
এক হাঁটু জল পেরিয়ে টিউশন পড়তে যেতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদের। পিঠে ব্যাগ, জলে সাইকেল ঠেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে তারা। গ্রামের বাসিন্দাদের এক হাঁটু জল পেরিয়েই খাদ্য সামগ্রী নিয়ে যেতে হচ্ছে। এমনকি প্রয়োজনে ফালাকাটা আসতে হলে এই জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জল গ্রামে ঢুকে পড়ায় সমস্যায় পড়েছেন ক্ষীরের কোট এবং জয় চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দারা। অনেকের বাড়ির উঠোনে ঢুকে গিয়েছে নদীর জল।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, নদীর জল চাষের ক্ষেতে ঢুকে পড়ায় রীতিমতো ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরা। কারণ জলের তলায় চলে গিয়েছে ভুট্টা ক্ষেত, সরষে ক্ষেত, কুমড়ো ক্ষেত এমনকি ধানের ক্ষেত। ইতিমধ্যে প্রশাসনে আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তবে এই সমস্যা সমাধানের কোনও প্রতিশ্রুতি তাঁরা দিতে পারেননি বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
চারিদিকে জল। ফলে বাড়ছে সাপ, পোকামাকড়ের উপদ্রব। তার মধ্যেই এক হাঁটু জল দিয়ে পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গ্রামবাসীরা চান, স্থায়ী সমাধান করুক প্রশাসন।