জলপাইগুড়ি: শুক্রবার টিভি নাইন বাংলা প্রথম খবর প্রকাশ করে দোমহনির ওই এক্সপ্রেস (Bikaner Guwahati Express Train Accident)দুর্ঘটনাস্থানে নাকি ‘ভূতের’ অস্তিত্ব টের পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের কথায়, সন্ধ্যা হলেই কেমন যেন একটা গা ছমছমে ব্যাপার লক্ষ্য করেন তারা। যত রাত বাড়ে, ততই নাকি বাড়ে সেই আর্তনাদের আওয়াজ বাড়তে থাকে।আর এই খবর প্রথম প্রকাশ পায় টিভি নাইন বাংলায়। তার জেরেই নড়েচড়ে বসলো প্রশাসন। গ্রামবাসীদের মনে ভূতের আতঙ্ক কাটাতে দোমহনী এলাকায় গিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দী।
বিডিওকে দেখে এলাকাবাসীদের প্রশ্ন, “আপনি তো দিনের বেলায় এসেছেন। কিন্তু ভূত আসে রাতে।” আর এই সব শুনে বিডিও জানালেন তিনি আজ রাতেও ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন। এক এলাকাবাসী বলেন, “রাত দশটার পর থেকে কিছু অনুভূতি হয়। কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়। ট্রেনের ভিতর থেকে বাঁচাও.. বাঁচাও শব্দ। ভয় লাগে আমাদের।”
শুধু ‘ভূতের উদ্ধার’ নয়, এলাকাবাসীর আরও একাধিক প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় বিডিওকে। ওই এলাকায় কৃষকদের অভিযোগ ছিল দুর্ঘটনার পর থেকে এলাকায় প্রচুর আধিকারিক সহ অন্যান্য সাধারণ মানুষ সেখানে এসেছে। তাঁদের গাড়ির চাকায় এবং পায়ের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষের জমির ফসল। সেই ব্যাপারে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। কৃষকদের সেই দাবীকে মান্যতা দিয়ে আজ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমিগুলি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে পরিদর্শন করেন ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দী।
এলাকা পরিদর্শনের পর বিডিও শুভ্র নন্দী বলেন, ” আমরা ভূত নিয়ে এলাকায় সচেতনতা প্রচার করলাম। গ্রামবাসীদের বক্তব্য রাতে নাকি এলাকায় ভূতের উপদ্রব বাড়ে। তাই আমরা আজ রাতেও এলাকায় আসবো।” এরপর কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে কৃষি আধিকারিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন। যেহেতু এই এলাকার কৃষকেরা কৃষি বন্ধু প্রকল্পের অন্তর্গত। তাই এদের কৃষি বীমা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য অবশ্যই উদ্যোগ গ্রহণ করব। পাশাপাশি এদের যাতে পুনরায় ফসলের বীজগুলি পায় সেই ব্যপারে চেষ্টা করা হবে।” ঘটনায় স্থানীয় কৃষক জামিদুল ইসলাম বলেন, “যদি আমরা ক্ষতিপূরণ পাই তবে আমাদের খুব উপকার হবে। কিন্তু আর কয়েকদিন পর কৃষকেরা জমি থেকে ভুট্টা বা সরিষা তুলবে। এখন আমরা ওই বীজ নিয়ে কী করবো?”
উল্লেখ্য, এদিন বিডিওর সঙ্গে এলাকা পরিদর্শনে যান জয়েন বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। এই টিমের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদেরও দেখা গিয়েছে। কিন্তু দেখা যায়নি কোনও মানসিক চিকিৎসক বা কোনও বিজ্ঞান বা যুক্তিবাদী সংগঠনের সদস্যদের। আর এতেই ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন এই টিম দিয়ে কি আদৌ গ্রামবাসীদের মন থেকে ভূতের আতঙ্ক দূর করা যাবে?