ধূপগুড়ি : উৎসবের অর্থই মিলন। কাউকে বাদ দিয়ে উৎসব পূর্ণতা পায় না। বিশেষত বাঙালির সবথেকে বড় উৎসবে কোনও দিন প্রাধান্য পায় না ধর্ম। পুজোর রীতি বজায় থাকলেও, এই উৎসবে আনন্দ আর মিলনই বড় হয়ে ওঠে। সেটাই আরও একবার প্রমাণিত হল মহাষ্টমীর সকালে। ঝড়ের তাণ্ডব থেকে দুর্গা মণ্ডপ এবং প্রতিমা রক্ষা করলেন চার সংখ্যালঘু যুবক। পুজো কমিটির সদস্যরা বলছেন ওঁরা না থাকলে, বিপদ হয়ে যেতে পারত। ধূপগুড়ি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার কোয়ার্টার পাড়ার মহিলা পরিচালিত সর্বজনীন দূর্গোৎসবে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এ দিন সকালে আচমকাই প্রবল ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে ধূপগুড়ি এলাকায়। সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ মুষলধারে বৃষ্টি। দমকা হাওয়ায় কার্যত দুলতে শুরু করে পুজোর প্যান্ডেল। কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, দুর্গা প্রতিমাও দুলছিল। আর একটু হলেই ভেঙে পড়তে পারত পুজো মণ্ডপ। অষ্টমীর ওই দৃশ্য দেখে তখন কেঁদে ফেলেন উপস্থিত মহিলারা। আর সেই প্যান্ডেল ভেঙে পড়তে দেখে ছুটে আসেন পাশের দোকানের লোকজন। আমির হোসেন, মহম্মদ জসিরুদ্দিন, মন্টু হোসেনরা গায়ের জোরে আটকে রাখেন, যাতে প্যান্ডেল পড়ে না যায়। পুজো মণ্ডপের খুঁটি ধরে কোনও ক্রমে রক্ষা করেন তাঁরা। কেউ আবার ঝড়ো হাওয়ায় দুলতে থাকা দুর্গা প্রতিমা ধরে বসে পড়েন।
ঘটনার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন পুজো কমিটির সম্পাদিকা শম্পা গুপ্ত। তিনি বলেন, সে এক নজিরবিহীন দৃশ্য, যা দেখে তাঁর গা শিউরে উঠেছিল। এই বিশেষ দিনে মা দুর্গার প্রতিমা এ ভাবে রক্ষা করার কৃতিত্ব ওই ব্যক্তিদের দিতে চান তিনি।
তিনি জানান, প্রত্যেকে ছুটে এসে প্যান্ডেল আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন। এই দৃশ্য দেখে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সাধারণ মানুষ। সকলেই বলছেন এটাই আসল ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত বর্ষ।