জলপাইগুড়ি: “আমি খাই, কিন্তু আমি ব্রাউন সুগারের ব্যবসা করি না। ব্যবসা করলে কি আমার বাড়ি এমন ভাঙাচোরা থাকত?” এ বয়ান মাদক ব্যবসায় জড়িত অভিযোগে ধৃত এক ব্যক্তির। আদালতে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সামনে এমনই সাফাই দিল মাদক ব্যবসায়ী।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানেল পাড় এলাকায় মাদক ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফেই এই অভিযোগ জমা পড়ছিল স্থানীয় থানায়। অন্যান্য নেশার সামগ্রীও বিকোচ্ছিল প্রকাশ্যেই।
ওই এলাকার বাসিন্দা রোহিত রায় ওরফে গুড্ডু নামে এক যুবকের নাম উঠে আসছিল এই ব্যবসার পিছনে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রোহিত নিজে যেমন মাদকাসক্ত, তেমনি গত কয়েক বছর ধরে রমরমিয়ে মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল সে। একই সঙ্গে নেশার টাকা জোগানোর জন্য এলাকার মানুষের কাছ থেকে তোলাবাজি করত বলেও অভিযোগ।
বুধবার এলাকায় এক বৃদ্ধ হকার জিনিসপত্র বিক্রির জন্য এসেছিলেন। অভিযোগ, রোহিত নেশা করার জন্য তাঁর কাছেও টাকা চায়। বৃদ্ধ হকার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। এর পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে স্থানীয়দের হুমকি দেয় রোহিত।
এরপর এলাকাবাসীরা দ্বারস্থ হন পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। সৈকত সঙ্গে সঙ্গে থানায় ফোন করলে পুলিশ আসে। কিন্তু ততক্ষণে গা ঢাকা দেয় রোহিত।
গভীর রাতে রোহিত এলাকায় ফিরে এসে আবার অত্যাচার শুরু করে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে রোহিতের বাড়িতে চড়াও হয়ে বাড়ি ভাঙচুর করেন।
পুলিশকে ফের ডেকে আনেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রোহিত ও তার মাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বর্তমানে এলাকার বাসিন্দারা ব্যাপক আতঙ্কে রয়েছেন৷ কারণ এর আগেও রোহিত একাধিক বার গ্রেফতার হয়েছে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে এলাকায় এসে ফের তাণ্ডব চালিয়েছে। তাই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, এবার যেন কোনও ভাবেই রোহিত জেল থেকে ছাড়া না পায়।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে৷ এবার জেল থেকে বের হলে আমি রোহিতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব। রোহিতকে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানোর ব্যবস্থা করব। আর তাতে রাজি না হলে জেলেই থাকবে।”
অভিযুক্ত যুবক রোহিত রায়ের বক্তব্য, ” মাদক বিক্রি করি না। কিন্তু মাদক খাই। এলাকার বাসিন্দারা মিথ্যা অভিযোগ করে আমার ও মায়ের নামে কেস দিয়েছে৷ আমি দোষী। আমার মা কোনও দোষ করেনি।”