Jalpaiguri: হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে স্কুলেই মেলা পড়ুয়াদের, উপার্জন দিয়ে সাহায্য করছে অনাথ শিশুদের

Nileswar Sanyal | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Oct 15, 2023 | 12:05 AM

Jalpaiguri: প্রিয়া দাস নামে এক ছাত্রী এখানে স্টল দিয়েছে। তার বাবা কাঠমিস্ত্রি। খুব কষ্ট করে তাদের সংসার চলে। প্রিয়ার কথায়, একটা নতুন জামাও যে কতটা আনন্দ দেয়, তা সে বোঝে। তাই স্কুলের সংসদে এই সিদ্ধান্ত হতেই এগিয়ে আসে সেও। মুসকান পারভিনও এই স্কুলেরই ছাত্রী। সেও নানা জিনিস বিক্রি করছে। সেই টাকা তুলে দেবে অনাথ ছেলে মেয়ের জামা কেনার জন্য।

Jalpaiguri: হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে স্কুলেই মেলা পড়ুয়াদের, উপার্জন দিয়ে সাহায্য করছে অনাথ শিশুদের
এভাবেই হাতে তৈরি জিনিস বিক্রি করছে পড়ুয়ারা।
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

জলপাইগুড়ি: সকলে আনন্দযজ্ঞে শামিল হতে না পারলে, সে যজ্ঞ যে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এই বিশ্বাস থেকেই অভিনব উদ্যোগ নিল জলপাইগুড়ি বিবেকানন্দ স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা। পুজোর মুখে নিজেদের হাতে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করে লাভের টাকায় অনাথ শিশুদের হাতে তুলে দেবে উপহার। পুজোয় নতুন জামার গন্ধে মন ভাল হয়। তবে এমন অনেকেই আছে, যাদের একটা জামা দেওয়ারও কেউ নেই। দু’বেলার খাবারটুকুই নিশ্চিত হয় ওদের জীবনে। নতুন জামা আসবে কোথা থেকে! তবে জলপাইগুড়ি বিবেকানন্দ স্কুলের পড়ুয়ারা দেখিয়ে দিল, ইচ্ছা থাকলে এটুকু করাই যায়।

ফেসবুক খুললেই দেখা যায়, বিভিন্ন পেজ থেকে লাইভ হচ্ছে। সেখানে কেউ এনেছেন পোশাকের সম্ভার, কেউ সাজের জিনিস, কেউ বা ঘরের রোজকার প্রয়োজনীয় সামগ্রী। হাতে তৈরি সাবান থেকে তেল, আচার থেকে গয়না, বিক্রি হচ্ছে দেদার। একদল স্কুল পড়ুয়াও সেভাবেই হাতে গড়া নানা জিনিস নিয়ে হাজির হয় মহালয়ার পুণ্য প্রভাতে।

করোনার পর পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে বিভিন্ন স্কুলে রাখা হয় ‘আনন্দ পরিসর’। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কোন পাকড়ি এলাকায় অবস্থিত বিবেকানন্দ হাইস্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা তাদের স্কুল সংসদে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়, এবার পুজোয় অনাথ শিশুদের কিছু জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করবে। নিজেরা হাতে তৈরি জিনিস নিয়ে স্কুলে মেলার আয়োজন করবে। তা বিক্রি করে যে টাকা আসবে তাতেই হবে সমাজকল্যাণ।

শনিবার মহালয়ার দিন মেলার আয়োজন করা হয়। স্কুল চত্বরেই সেই মেলায় ছাত্র ছাত্রীরা তাদের হাতে তৈরি বিভিন্ন শিল্পকর্ম বিক্রি করে। শুধু তাই নয়, ছিল ফুচকা, ঘুগনি থেকে লুচি তরকারির স্টলও। গ্রামের মানুষেরা উপচে পড়েন এই মেলা দেখতে।

প্রিয়া দাস নামে এক ছাত্রী এখানে স্টল দিয়েছে। তার বাবা কাঠমিস্ত্রি। খুব কষ্ট করে তাদের সংসার চলে। প্রিয়ার কথায়, একটা নতুন জামাও যে কতটা আনন্দ দেয়, তা সে বোঝে। তাই স্কুলের সংসদে এই সিদ্ধান্ত হতেই এগিয়ে আসে সেও। মুসকান পারভিনও এই স্কুলেরই ছাত্রী। সেও নানা জিনিস বিক্রি করছে। সেই টাকা তুলে দেবে অনাথ ছেলে মেয়ের জামা কেনার জন্য।

হাসিনা বানু নামে এক অভিভাবিকা জানান, মেয়ে এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। বারবার বলেছিল, ওরা মেলা করছে, দেখে যেতে। স্কুলে এসে মা যা দেখলেন, তাতে চোখ ছলছল তাঁর। গর্ব হচ্ছে এমন সন্তানের জন্য। অভিভূত তাঁর সন্তানসমদের উদ্যোগ দেখে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা আলো সরকার বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে স্কুলে আনন্দ পরিসর প্রকল্প চালু করেছি। তবে এবার ছেলে মেয়েরা যা করে দেখাল আমরা আপ্লুত। ভাবতেই পারছি না আমার স্কুলে এমন সুন্দর প্রতিভাবান পড়ুয়ারা আছে।” পড়ুয়াদের জন্য গর্ব করছেন প্রধান শিক্ষিকাও।

Next Article