AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

লকডাউনে কাজ খুইয়েছেন, বৃদ্ধ বাবাকে প্রতীক্ষালয়ে বসিয়ে পালাল ছেলে!

Old Man: গলা ধরে আসে বৃদ্ধের। বলেন, "আমি ভাবলাম শিলিগুড়ি গেলে ভালই কাজ পাব। তাই ছেলের কথায় বাড়ি বিক্রি করার সম্মতি দিয়ে দিই। গত এক মাস আগে বাড়িঘর বিক্রি করে ছেলে এবং ছেলের বউ আমাকে প্রতিক্ষালয়ে বসিয়ে কোথায় চলে গেছে তাদের আর খোঁজ নেই।''

লকডাউনে কাজ খুইয়েছেন, বৃদ্ধ বাবাকে প্রতীক্ষালয়ে বসিয়ে পালাল ছেলে!
নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Jul 28, 2021 | 7:34 PM
Share

মালবাজার: লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন বৃদ্ধ বাবা। ছেলের হাতেও তেমন কোনও কাজ নেই। তাই বাবাকে সে পরামর্শ দেয় বাড়ি বিক্রি করে অন্য জায়গায় গিয়ে ব্যবসা করলে ভাল হয়। ছেলের কথা মতো বাড়িঘর বিক্রি করে তার হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলেন। সেই বাবাকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সমস্ত জমি, বাড়ি বিক্রি করে বেপাত্তা হল ছেলে। ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি এলাকার ঘটনা।

জানা গিয়েছে, রামচন্দ্র কানু (৬১) নামের ওই ব্যক্তি ছেলে বিনোদ কানু (৩৭) ও বউমার সঙ্গে মালবাজার মহকুমার ওদলাবাড়ি ডিপো পাড়া এলাকায় থাকতেন। রামবাবু মিষ্টির দোকানে কারিগরের কাজ করতেন। তবে করোনা আবহে সেই কাজ চলে গিয়েছে। এমনকি ছেলেরও সেরকম কোনও কাজ ছিল না। সংসার চলছিল না।

একদিন বাবাকে ছেলে প্রস্তাব দেন বাড়ি বিক্রি করে শিলিগুড়ি গিয়ে থাকবেন এবং ওখানে দু’জনের কাজের ব্যবস্থা হবে। ছেলের কথা মতো নিজের ভিটে বিক্রি করে দেন বাবা। এরপর বাবাকে একটি প্রতীক্ষালয়ে বসিয়ে রেখে আর ফেরেনি ছেলে ও বউমা। বেকায়দায় পড়ে সেখানেই কাটছে বৃদ্ধের দিনরাত। এভাবে থাকতে থাকতে ঠিকমতো ঘুম, খাওয়া না হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ওদলাবাড়ি স্বেচ্চাসেবী সংগঠন ন্যাচার এন্ড অ্যাডভেঞ্চার সোসাইটির সদস্যরা অসহায় ওই বৃদ্ধকে মাল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। বর্তমানে সংগঠনের উদ্যোগে ওদলাবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। রামচন্দ্র কানু বলেন, “আমি ওদলাবাড়ির একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতাম কিন্তু লকডাউনের জন্য কাজ আর নেই। ছেলেরও কাজ ছিল না। তাই একদিন ছেলে আমাকে বলল, আমরা এখানকার বাড়ি বিক্রি করে শিলিগুড়ি যাই। সেখানে অন্য দোকানে দু’জনেই কাজ করব। আমার কাছে কিছু টাকা ছিল, সেই টাকাও ছেলে নিয়ে নেয়।”

এরপর গলা ধরে আসে বৃদ্ধের। বলেন, “আমি ভাবলাম শিলিগুড়ি গেলে ভালই কাজ পাব। তাই ছেলের কথায় বাড়ি বিক্রি করার সম্মতি দিয়ে দিই। গত এক মাস আগে বাড়িঘর বিক্রি করে ছেলে এবং ছেলের বউ আমাকে প্রতিক্ষালয়ে বসিয়ে কোথায় চলে গেছে তাদের আর খোঁজ নেই। এখন এই প্রতিক্ষালয়ে দিন রাত কাটাচ্ছি। এটাই এখন আমার ঘরবাড়ি। তবে ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করার জন্য শরীর দুর্বল। হাঁটা চলার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। বহু খোঁজ করেও ছেলের সন্ধান পাইনি আমি!”

ছেলের এহেন কর্মকাণ্ডে হতবাক এলাকাবাসী। বৃদ্ধ বাবাকে কি এভাবে পথে ফেলে রেখে চলে যেতে পারে ছেলে? স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ব্যক্তির ছেলের খোঁজ শুরু করেছেন। আরও পড়ুন: ‘মদ খেতে বারণ করেছিলাম, তারপরেই…’ দিনদুপুরে বোমাবাজি, উত্তপ্ত জগদ্দল!