জলপাইগুড়ি: চা বাগানে উন্নয়ন হয়নি। প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজ হয় না। এমন অভিযোগ বিরোধীরা করেই থাকেন। কিন্তু তাই বলে সেই অভিযোগ তুলে দলেরই বিধায়ককে ‘মাতাল’ সম্বোধন! এমনই ঘটনা ঘটল জলপাইগুড়ির এক সভা মঞ্চে। বিধায়ককে ‘মাতাল’ বলতে শোনা গেল তৃণমূলেরই এক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে। মঙ্গলবার বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এই ভাষায় আক্রমণ করতে শোনা গেল তৃণমূল নেতাকে। এই মন্তব্য অস্বস্তি বাড়িয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই।
মঙ্গলবার বিকেলে জলপাইগুড়ি ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ফুটবল ময়দানে আদিবাসী দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। দাপুটে তৃণমূল নেতা জলপাইগুড়ির এসসি-এসটি-ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। উত্তরের কেষ্ট দা বলে পরিচিত কৃষ্ণ দাসের একাধিক অনুগামী উপস্থিত ছিলেন মঞ্চে। সেখানেই ছিলেন তৃণমূলের পাতকাটা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীযুক্ত প্রধান হেমব্রম। এলাকার বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে কটাক্ষ করে মন্তব্য করতে শোনা যায় তাঁকে।
তিনি রায়পুর চা বাগান নিয়ে আক্ষেপ করেন। ওই চা বাগান বন্ধ রয়েছে। নেতার দাবি, ভোটের সময় অনেক দলই চা বাগানে এসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়, তারপর আদিবাসীদের ভোট নিয়ে চলে যায়। এরপরই ওই তৃণমূল নেতা বলে ফেলেন, ‘আমাদের এমএলএ তো মাতাল। উনি নিজের ঘর সামলে রাখতে পারেন না, আমাদের কী দেখবেন।’
প্রধান হেমব্রমের এমন মন্তব্য শুনে মঞ্চে থাকা নেতারা একে অপরের মুখের দিকে তাকান। তারপর হাসির রোল ওঠে।
যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করার কোনও উপায় আমার কাছে নেই। তবে এই মন্তব্যে যদি বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে নিশানা করা হয়ে থাকে, তাহলে তা নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বৈঠকে বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলে দিয়েছেন, কোনও ক্ষোভ থাকলে তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা করতে হবে, দলের বাইরে বলা যাবে না।
অন্যদিকে, এই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জেলার বিজেপি সহ সভাপতি শ্যাম প্রসাদের দাবি, এই খগেশ্বর রায়কে ভোটে জেতানোর জন্য ছাপ্পা দিয়েছিলেন আদিবাসী নেতারা। আর সেই নেতাই আজ মাতাল বলে নিজেকে স্বচ্ছ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। বিজেপি নেতা মনে করেন, নিজেদের বাঁচানোর জন্য এ ভাবে দলের নেতাকে আক্রমণ করছেন ওই নেতা।