ডুয়ার্স: অভাবের সংসারে জঙ্গল থেকে জ্বালানি সংগ্রহ করাই রোজকার কাজ। জঙ্গলে সেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে বুনো হাতির হামলায় (Elephant Attack) মৃত্যু হল দুই আদিবাসী মহিলার। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নাগরাকাটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, জঙ্গলেই মারা যান দু’জন। নাগরাকাটা ব্লকের প্রত্যন্ত হিলা চা বাগান। তার পাশেই রয়েছে সিপচু বিটের জঙ্গল। সেখানেই জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন ওই মহিলারা। সেখানেই বুনো হাতির পাল্লায় পড়েন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতদের নাম নিমা মাহালি (২৯) ও অনিতা মাহালি (১৮)। দু’জনই নাগরাকাটা ব্লকের চম্পাগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা এখানকার হিলা চাবাগানের ২ নম্বর লাইন শ্রমিক মহল্লায় থাকতেন তাঁরা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার নিমা ও অনিতা মহল্লার কয়েকজনের সঙ্গে বিকেল ৩টে নাগাদ জলঢাকা নদী পার করে সিপচু জঙ্গলে গিয়েছিলেন। সেই সময় আচমকাই এক বুনো দাঁতাল তাঁদের সামনে চলে আসে।
আচমকাই এভাবে হাতির সামনে পড়ে যাবেন, ভাবতেও পারেননি দুই তরুণী। ঘাবড়ে যান তাঁরা। সঙ্গীরা পালাতে সক্ষম হলেও তাঁরা পারেননি। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই তরুণীকে একেবারে আছাড়িবিছাড়ি করে মারে বুনো দাঁতাল। এ বিষয়ে খুনিয়া বন্যপ্রাণ স্কোয়াডের রেঞ্জার সজলকুমার দে বলেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনা। শনিবার তাঁরা জঙ্গলে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে গিয়ে হাতির আক্রমণের শিকার হন। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়।
শনিবার রাতে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অপর মৃতদেহ উদ্ধার হয় রবিবার। রেঞ্জ অফিস জানিয়েছে, যেহেতু বনের ভিতরে মারা গিয়েছেন, তাই সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। নাগরাকাটা থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
এ নিয়ে চালসার পরিবেশপ্রেমী মানবেন্দ্র দে সরকার বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এই ঘটনাটি প্রথম নয়। এর আগেও জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির আক্রমণে অনেকেই মারা গিয়েছেন। তবুও মানুষ সচেতন হননি। এই প্রবণতা দূর করা দরকার।”