জলপাইগুড়ি: ভয়ঙ্কর সে দৃশ্য। শিউরে ওঠার মতো পথদুর্ঘটনা। সোমবারের পড়ন্ত বিকেলে গজলডোবা সাক্ষী থাকল সেই ঘটনার। একটি ডাম্পারের সঙ্গে একটি যাত্রীবোঝাই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ। এরপরই প্রাণে বাঁচতে বাস থেকে একের পর এক যাত্রী ঝাঁপ দেন সামনের খালে। শুধু তাই নয়, এই দুর্ঘটনায় এক তরুণীর হাতের একটা অংশ কেটে আলাদা হয়ে যায়। পরে দেখা যায় এক মহিলা সেই কাটা হাত নিয়ে এগিয়ে আসছেন। বীভৎসতা দেখে চোখ মুখ শুকিয়ে যায় এলাকার লোকজনের। কোনও মতে নিজেদের সামাল দিয়ে উদ্ধারে হাত লাগান তাঁরা। পরে এসে পৌঁছয় মিলনপল্লি ফাঁড়ির পুলিশও। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার বিকেলে অসম থেকে গজলডোবা রোড ধরে শিলিগুড়ি থেকে একটি বাস যাচ্ছিল। তার গন্তব্য ছিল গজলডোবাই। বাসটি পর্যটকবোঝাই ছিল। গজলডোবায় তিস্তা ক্যানালের কাছে হঠাৎই একটি ডাম্পার এসে ওই পর্যটকদের বাসটিতে ধাক্কা মারে। ডাম্পারটি পুরোপুরি উল্টে যায়। অন্যদিকে বাসটিও ক্যানালের দিকে হেলে পড়ে। অভিযোগ, ডাম্পারটি ওভারটেক করতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটে।
ভয়ে প্রাণে বাঁচতে এরপর একের পর এক বাসের যাত্রী ক্যানালের জলে ঝাঁপ মারতে শুরু করেন বলে স্থানীয়দের বক্তব্য। পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে জলে ঝাঁপ দেন। তবে বাসের মধ্যেও অনেকে আহত হন। কারও জানলায় মাথা ঠুঁকে যায়। কেউ আবার সামনের সিটের পিছনে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। গুরুতর আঘাত লাগে। এরপরই এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। কিন্তু সেই একদিকে হেলে থাকা বাস সোজা করার ক্ষমতা ছিল না। কোনওমতে ক্যানালে নেমে সেখান থেকে বাসে ওঠার চেষ্টা করেন।
ওদিকে তখন ক্যানালের জল থেকে আর্তনাদ করে চলেছেন কয়েকজন। তাঁদেরও টেনে তোলার চেষ্টা করেন এলাকার লোকজনই। এরইমধ্যে দেখা যায় এক মহিলা কাটা হাত নিয়ে এগিয়ে আসছেন। পরে জানা যায়, এক তরুণীর হাত কেটে যায়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “বিকেল ৪টে নাগাদ ঘটনাটা ঘটেছে। একটা বাস আর ডাম্পারের ধাক্কা লাগে। ডাম্পারটা উল্টে যায়। বাসটা পুরোপুরি উল্টে যাওয়া থেকে চালক অনেক চেষ্টায় বাঁচান। একজনের আঘাত গুরুতর। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।”