জলপাইগুড়ি: দশমীর রাতে বিসর্জন দেখতে গিয়ে হড়পা বানে নিমেষে ভেসে যান অসংখ্য মানুষ। ৮ জনের মৃত্যু হয়। কোনওক্রমে যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন তাঁরাও কম বেশি আহত। অধিকাংশই প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা নিয়ে। ডুয়ার্সের নদীগুলিতে হড়পা বান আসে, তা হলে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনও অভিযোগ, হড়পা বান আসার সময় নদীর ঘাটে ছিলেন প্রায় হাজার জন। অথচ সিভিল ডিফেন্সের ৮ জন ছিলেন সেখানে। এমনকী তাঁদের হাতে দড়ি ছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলার আর কোনও সরঞ্জামই ছিল না বলেও অভিযোগ। যদিও এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “একটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পরিবারের আবেগকে কোথাও আহত করা বা তা নিয়ে আপত্তি তোলা উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু যেখানে বারবার মাইকিং হয়েছে জল বাড়ছে উঠে আসুন। সেখানে কথা শোনা হল না কেন?”
এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “মাথাপিছু কতজন পুলিশ দিতে হবে? এই দিকগুলো দেখা উচিত। মৃত্যু, দুর্ঘটনা অবাঞ্ছিত। যাদের পরিবারে সঙ্কট হয়েছে, এ সময় একটা আবেগ কাজ করে। যে ক’জন কর্মী ছিলেন, তারা কতজনকে তুলেছেন সেটাও বলুন। ৮-৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৫০-৩০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কারা করল এটা? জল বাড়ছে। একটা নদী। বারবার মাইকিং করা হচ্ছে। কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। নিশ্চয়ই কাটা ছেঁড়া হবে এসব নিয়ে। কিন্তু তা বলে একতরফা অভিযোগের জায়গা নেই। আক্ষেপ করার আগে সার্বিক পরিস্থিতি দেখে নেওয়া ভাল।”
এদিকে ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী বলেন, “যাঁরা ঘোষণা করছিলেন, তাঁদের আমরা জানাই জল বাড়ছে। তাঁরা সেইমতো অ্যানাউন্সও করেন মাইকে। তাড়াতাড়ি সকলকে সরে যাওয়ার জন্য বলেন।” তবে সামগ্রী যে সঙ্গে খুব বেশি ছিল না, তা তাঁরা স্বীকার করেন। বলেন, “আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকেই কাজ করেছি। সঙ্গে শুধু দড়ি ছিল।” অন্যদিকে সিভিল ডিফেন্স অফিসার পল্লববিকাশ মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমাদের কাছে সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার কম আছে। ৮ জনকে পাঠানো হয় মাল মহকুমার জন্য।” এদিকে তাঁর ঘাড়ে দায়িত্ব থাকলেও ঘটনার দিন এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পল্লববিকাশবাবু বলেন, “আমি ছুটিতে ছিলাম না। আমার ডিউটি এই ঘাটেই ছিল। আমার এক আত্মীয় অসুস্থ থাকায় তাঁকে দেখতে যাই। আমি গেছি রাতেই। তারপর ঘটনাটা ঘটে।”