জলপাইগুড়ি: তৃণমূল কাউন্সিলরের উপস্থিতিতেই মহিলা চিকিৎসককে থ্রেট দেওয়ার অভিযোগ।ঘটনায় জোর শোরগোল জলপাইগুড়িতে। ঘটনা নিয়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ বৈঠক করলেও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা যাচ্ছে। অভিযুক্ত শাসক নেতা বলেই কি এফআইআর করল না জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে কর্তৃপক্ষ? প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। কিন্তু ঘটনার সূত্র পাত কোথা থেকে?
মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে থাকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এক ক্যানসার আক্রান্ত মহিলাকে নিয়ে আসে তার বাড়ির লোকেরা। চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা করবার পর মৃত বলে ঘোষনা করেন। জানানো হয় ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। আর এতেই বেঁকে বসে বাড়ির লোক। দাবি করা হয় ময়নাতদন্ত না করেই দেহ ফিরিয়ে দিতে হবে। আর এই নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা।
খবর পেয়ে আসেন ২২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পিঙ্কু বিশ্বাস। অভিযোগ, তাঁর উপস্থিতিতে দেহ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ডাক্তার পৌলমী সাহা ও ডাক্তার সব্যসাচী দে ও অন্যান্য চিকিৎসকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। হুমকিও দেওয়া হয়। যদিও এ ঘটনা নিয়ে কোনও দায় নিতে চাননি পিঙ্কু। অন্যদিকে চিকিৎসকদের অভিযোগ, সমস্ত ঘটনায় পুলিশ কার্যত নিরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল। কোনও অ্য়াকশনই নেয়নি।
হাসপাতালের এই খবর পেয়ে হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে আসে মেডিক্যাল পড়ুয়ারা। শুরু হয়ে যায় অবস্থান। আসেন অন্যান্য চিকিৎসকেরাও। ছুটে আসেন কোতোয়ালি থানার আইসি। আসেন সহকারি সুপার সুরজিৎ সেন। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এই ঘটনা নিয়ে বুধবার দুপুরে বৈঠকে বসেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাক্তার প্রবীর কুমার দেব। ছিলেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জলপাইগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক ডাক্তার প্রদীপ কুমার বর্মা। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌভনিক মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা। দীর্ঘক্ষন ধরে বৈঠক চলে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাক্তার প্রদীপ কুমার বর্মা। তিনি জানিয়ে দেন নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে যদি মৃত অবস্থায় কাউকে নিয়ে আসা হয় তবে সেই দেহের ময়নাতদন্ত অবশ্যই করা হবে। একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “মঙ্গলবার রাতের ঘটনা আমরা আর দীর্ঘায়িত করব না। আমরা কোনও অভিযোগ দায়ের করব না। এই ঘটনার এখানেই ইতি টানা হচ্ছে।”