কালিম্পং: কয়েক সপ্তাহ আগেও যেখানে পর্যটকদের ভিড় লেগে ছিল, সেই জোশীমঠ(Joshimath)-ই আজ বসবাসের অযোগ্য। ভূমিধস ও ফাটলের জেরে ঘরছাড়া হয়েছেন হাজার-হাজার পরিবার। বলা চলে এখন সংবাদ শিরোনামে শুধুই দেবভূমি। কিন্তু এ রাজ্যের কী অবস্থা? ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের স্থান দার্জিলিংয়েও কি জোশীমঠের ছায়া? কার্শিয়াংয়ের কর্মঠ গ্রামের বাড়িতে-বাড়িতে ফাটল খুঁজে পেয়েছে টিভি ৯ বাংলা। কিন্তু সেখানে ফাটল কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামেরই খুব কাছ থেকে তৈরি হচ্ছে সেবক-রংপো রেল টানেল (Sevoke Railway tunnel:)। ডিনামাইট ফাটিয়ে সেই টানেল বানাতে গিয়েই নাকি বিপত্তি। বিপর্যয় মোকাবিলা বিশেষজ্ঞ ফাটল পরীক্ষা করে বলছেন, এখনই সাবধান না হলে বিপদ আসন্ন।
কার্শিয়াংয়ের কালিঝোড়া থেকে পাহাড়ি রাস্তা ধরে উপরে উঠলেই পড়বে পর্যটনকেন্দ্র লাটপাঞ্চর। সেখানের কর্মঠ ফরেস্ট ভিলেজের একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরতে শুরু করেছে। আর সেই ছবি মনে করাচ্ছে জোশীমঠকে। শুধু জোশীমঠ বলা ভুল, রেলের টানেল তৈরি করতে গিয়ে খোদ কলকাতার বৌ-বাজারের যে পরিণতি হয়েছিল সেই একই পরিণতি হবে না তো এই কর্মঠের?
স্থানীয় এক বাসিন্দা সুমন রাই বলেন, “টানেল তৈরির আগে এই ফাটল ছিল না। এখন ফাটল ধরেছে।” আরও এক এলাকাবাসী বলেন, “এতদিন পর্যন্ত বাড়িতে চিড় দেখতে পাইনি। টানেল বানানোর পর থেকেই দেখছি বাড়িতে ফাটল।”
এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুপীনাথ ভাণ্ডারি বলেন, “আমরা সাবধানতা অবলম্বন করছি। বাইরে থেকে জলের চাপ যাতে আসতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে যদি রাস্তা ঠিকঠাকভাবে না বসে তাহলে জোঠীমঠের মতো পরিস্থিতি হলেও হতে পারে।”
একদিকে রেলের টানেল, আর একদিকে তিস্তার জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এই দুয়ের মাঝে পড়ে যাচ্ছে কালীঝোড়া। শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী এই পথ বর্ষাকালে বেশ কয়েকদিন বন্ধ থাকে। আর এই সবের মধ্যে বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন এখানকার মানুষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুপীনাথ ভাণ্ডারি জানান, “যখন ট্রেন চলবে তখন কাঁপুনি অনুভূত হবে। যার ফলে বাড়িগুলিতেও কম্পন অনুভূত হবে। আর তারফলে আরও বেশি-বেশি ফাটল দেখা দিতে পারে।”