হুগলি : প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্য করা যাবে না বলে আগেই বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তারপরই বারবার বিস্ফোরক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) গলায়। রবিবারের পর সোমবার ফের একবার প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন তিনি। তৃণমূল সাংসদের বক্তব্য, এত বেশি নির্দল প্রার্থীর জন্য দায়ী আইপ্যাক। তিনি সাফ জানিয়েছেন, কনট্রাক্টর দিয়ে রাজনৈতিক দল চলে না। রবিবারই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘প্রার্থীদের জেতাতে ময়দানে আইপ্যাককে দেখা যাচ্ছে না, আমাকেই খাটতে হচ্ছে।’ আর এবার নির্দল প্রার্থী প্রসঙ্গে মুখ খুলতে গিয়ে ফের আইপ্যাকের দিকেই আঙুল তুললেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। এ দিন তিনি বলেছেন, ‘ আইপ্যাকের ঠেলায় জান বেরিয়ে যাচ্ছে।’
প্রচারে বেরিয়ে আইপ্যাকের বিরুদ্ধে এ দিন কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, গত জুন-জুলাই মাসে যখন প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য বাছাই করা হয়েছিল, তখনও তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। সাংসদ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কেউ কোনও আলোচনাই করলেন না। এত দিন ধরে সাংসদ হয়ে কাজ করছি, কেউ কোনও কথাই বললেন না। আই প্যাকের রিপোর্ট অনুযায়ী কলকাতার কোনও নেতার সুপারিশে সব হয়ে গেল।’ তিনি উল্লেখ করেছেন, আইপ্যাকের মত অনুযায়ী, যে প্রার্থী বাছাই হয়েছে তার ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে সেই সদস্যরাই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এ দিন প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকে কার্যত কনট্রাক্টর তকমা দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনের পর যে সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের দীর্ঘ চুক্তি হয়েছিল, ২০২১-এ রণকৌশল ঠিক করে দিয়েছিল যে সংস্থা, তাদের সম্পর্কে কল্যাণের মন্তব্য, ‘রাজনৈতিক দল নিজের মত অনুযায়ী চলবে, কনট্রাক্টর দিয়ে রাজনৈতিক দল চলে না।’ কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে আইপ্যাকের যে ছেলেটা এসেছিল তাঁকে খুঁজছি, পেলে একবার পালিশ করে দিতাম।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে, আইপ্যাকের তরফে অনেককে বলা হয়েছিল, ‘আপনারাই প্রার্থী হবেন। আপনারা ডিটেলস দিন।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি দেখতেন সদস্য কারা হচ্ছেন, তা হলে হয়তো আজ এই পরিস্থিতি হত না বলে মন্তব্য করেছেন কল্যাণ।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘ওপরে ওপরে প্রলেপ দিয়ে ভিতরে ভিতরে যে সারানো যায় না, এটাই তার প্রমাণ।’ তৃণমূলে যে গৃহযুদ্ধের আগুন জ্বলছে, তা আর বেশি দিন ছাই চাপা থাকছে না, বলেই তাঁর মত। আইপ্যাকের জন্য তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব বাড়ছে, আর তার জন্য বিজেপির লাভ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন : Deocha Pachami Coal Mining Project: খাদান মালিকদের একাংশের মদতেই জোরাল হচ্ছে দেউচার আন্দোলন, তোপ মমতার