কলকাতা : একুশের বিধানসভা নির্বাচনে (Assembly ELection) অস্তিত্ব হারিয়েছিল বামেরা। দলের তরুণ নেতা-নেত্রীদের মাঠে নামিয়েও লাভ হয়নি খুব একটা। কেউ বলেছেন জোটের জন্য ভরাডুবি। কেউ বলেছেন, জোট না হলে আর কিই বা করার ছিল বামেদের। পর্যালোচনা হয়েছে অনেক, সে সব কতটা ফলপ্রসূ, তা সময়ই বলবে। তবে উপ নির্বাচনের পর ফল ভালো না হলেও রাজনৈতিক চর্চায় উঠে এল বামেরা।
ফলাফলে দেখা গেল, ভোট শতাংশ বেড়েছে বামেদের। চার কেন্দ্রে উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে আজ। তাতে দেখা গিয়েছে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট শতাংশে কিছুটা এগিয়েছে বাম প্রার্থীরা। উল্লেখযোগ্যভাবে খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রে কয়েক রাউন্ড গণনার পর বিজেপিকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে সিপিএম। বিজেপিকে টক্কর দিতে পেরে খুশি বাম শিবির। বাংলায় বিকল্প হিসেবে ফের জায়গা করে নেওয়ার আশা দেখছেন বাম নেতারা।
এই চার কেন্দ্রের হিসেব দেখলে দেখা যাবে, ২০২১-এ বামেদের ভোট ছিল ৫.৬ শতাংশ। এবার প্রাপ্ত হল ৮.৪৯ শতাংশ। অর্থা সব মিলিয়ে বেড়েছে ২.৮২ শতাংশ ভোট। আর ২০২১-এ সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪.৭৩ শতাংশ। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে, ৭.২৭ শতাংশ, ২.৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
দিনহাটা
২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন, বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক। বাম তথা ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী আবদুর রউফ পেয়েছিলেন ৬০৬৯ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ২.৪৯ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পেয়েছেন ৬২৯০ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ২.৭৯ শতাংশ।
গোসাবা
২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন, তৃণমূলের জয়ন্ত নস্কর। বাম তথা আরএসপি প্রার্থী অনীল চন্দ্র মণ্ডল পেয়েছিলেন ৪৮৭১ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ২.৪৯ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে আরএসপি প্রার্থী পেয়েছেন ৩০৭৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১.৬৬ শতাংশ।
খড়দহ
২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন, তৃণমূলের কাজল সিনহা। বাম তথা সিপিএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাস পেয়েছিলেন ২৬৯১৬ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১৪.৭ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেবজ্যোতি দাস পেয়েছেন ১৬,১১০ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১০.৩৯ শতাংশ।
শান্তিপুর
২০২১-এ এই আসনে জয়ী হন, বিজেপির জগন্নাথ সরকার। মোর্চা মনোনীত কংগ্রেস প্রার্থী ঋজু ঘোষাল পেয়েছিলেন ৯৮৪৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ৪.৪৯ শতাংশ। এবার সেই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী পেয়েছেন ৩৯,৯৫৮ ভোট, শতাংশের বিচারে যা ১০.৩৯ শতাংশ।
এই ফলাফলে আশা দেখছে বামেরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘খড়দহ ও শান্তিপুর দুই কেন্দ্রে বামেদের ভোট বিজেপির প্রায় সমান। সেটা বড় কথা নয়, তবে বামই যে একমাত্র বিকল্প সেটাই মানুষ অনুভব করছে, ভোটের ফলে সেটা বোঝা যাচ্ছে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘চার কেন্দ্রে বিজেপির ভোট প্রায় একই আছে। সবাই চেষ্টা করছিল বিজেপি বা তৃণমূলকে আনতে, কিন্তু ৬ মাসেই বিজেপির ভোট কমেছে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার।’ তাঁর কথায়, ‘দিলীপ ঘোষ, তথাগত কেন, স্বয়ং মোদীও বাংলায় বিজেপিকে দাঁড় করাতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: Tathagata Roy: ‘লালা ঝরছিল,’ উপনির্বাচনের ফলের পর দিলীপ-কৈলাসকে কুরুচিকর আক্রমণ তথাগতর