হাওড়া: এবার মদন মিত্রের নিশানায় দলত্যাগী বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। সদ্য বিজেপিতে যাওয়া বালির বিধায়কের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনে শুক্রবার মদনের তীব্র আক্রমণ, “বালিতে পাপ করেছে বৈশালী, প্রায়শ্চিত্ত করবে মমতা।’’
গত ২৯ জানুয়ারি চাটার্ড প্লেনে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন বৈশালী ডালমিয়া। তার আগে অবশ্য দলবিরোধী মন্তব্য করায় তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন হাওড়ার হেভিওয়েট নেতা তথা প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ায় তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী থেকে প্রাক্তন মেয়র এবং বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় শাসক দলের অন্দরে যথেষ্ট চাপ তৈরি হয়েছে। তাই বালির জনসভা থেকে কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি দলত্যাগীদের তীব্র আক্রমণ শানালেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। তাঁদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মদনের মন্তব্য “বালিতে খেলা হবে, কামারহাটিতে খেলা হবে, ব্যারাকপুরে খেলা হবে, বাংলা জুড়ে ২৯৪ কেন্দ্রে খেলা হবে।’’ এখানেই শেষ নয়, বিধানসভা নির্বাচন যে ‘নিরামিষ’ হবে না তা নিয়ে মদনের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য, “যে খেলায় যা লাগে, সব মশলাই তৈরি আছে।’’ বলেন, “ক্রিকেট খেলতে লাগে ব্যাট, ফুটবলে বল, হকি খেলায় হকি স্টিক, তেমনি ভোটেও যা মশলা লাগে সব তৈরি আছে।’’ এরপরেই দলত্যাগী বৈশালী ডালমিয়ার উদ্দেশে মদন–বাণ, “বালিতে পাপ করেছে বৈশালী, প্রায়শ্চিত্ত করবে মমতা।’’
আরও পড়ুন: ভোটের আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বদল, নতুন নগরপাল সৌমেন মিত্র
এর আগে তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে একাধিক জনসভা থেকে নিশানা করেছেন মদন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন বৈশালী ডালমিয়াও। পাশাপাশি এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে ভগবান রামকে নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ করেন মদন। এনআরসি নিয়ে বঙ্গ বিজেপির অবস্থান প্রসঙ্গে ঝাঁঝালো আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ওরা এনআরসি করে সীতাকেই বাদ করে দিয়েছে। তাঁর আধার কার্ডও কেড়ে নিয়েছে। আমরা আমাদের বুকে রাম ও সীতা দুজনকেই স্থান দিয়েছি। সীতা ছাড়া রাম হয় না, কটাক্ষ মদনের।
প্রসঙ্গত, বিজেপির যোগদান মেলার জবাব দিতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ডুমুরজলাতেই বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। হাওড়ার তৃণমূল জেলা সভাপতি অরূপ রায় নিজে সেই সভা সফল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। চলছে এলাকায় এলাকায় প্রস্তুতি সভা। শুক্রবার বালির বিনয় বাদল দীনেশ নগরে ডুমুরজলায় তেমনই এক সভা করল তৃণমূল। সভায় জেলার তৃণমূল নেতাদের মুখে যেমন দলত্যাগীদের উদেশ্যে তীব্র শ্লেষ ছিল, তেমনি বিজেপির বিরুদ্ধে ছিল ধারালো আক্রমণ। সেই আক্রমণ আবার কখনও শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে। যেমন সভার শুরুতেই বালির তৃণমূল নেতা ভাস্করগোপাল চট্টোপাধ্যায় বিজেপির সমালোমনা করতে গিয়ে বলেন, ‘সন্ধ্যে হলেই পেটে রাম ঢালছে আর মুখে বলছে জয় শ্রীরাম।’ এদিনের সভার অন্যতম বক্তা হাওড়া জেলা পরিষদের সহ–সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বৈশালী ডালমিয়াকে। তিনি বলেন, ‘বালিতে সিপিএমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যারা তৃণমূলকে জয়ী করেছে তাদের কে যেন উঁইপোকা বলেছে! আসলে ওঁরাই উঁইপোকা। আমাদের ভুল আমরা ওঁদের আগে চিনতে পারিনি। ওরা গিয়েছেন ভালই হয়েছে।’