‘গেট ওয়েল সুন’, জল ডিঙিয়ে করোনা আক্রান্তের ‘দুয়ারে’বার্তা মহকুমা শাসকের

মহকুমা শাসক সঞ্জয়বাবু বলেন, "করোনাকালে মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজ্য বা প্রশাসনের নির্দেশে নয়, আমরা নিজেরাই উদ্য়োগ নিয়ে 'গেট ওয়েল সুন' নামে একটা প্রকল্পধারা করেছি। মানুষের কাছে অতি প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।"

'গেট ওয়েল সুন', জল ডিঙিয়ে করোনা আক্রান্তের 'দুয়ারে'বার্তা মহকুমা শাসকের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 29, 2021 | 8:41 PM

মালদা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি দেখেছে বাংলা। সঙ্গে দোসর মহামারি করোনা (Corona)। ঝড়জল মিটতেই তাই আর দেরি করেননি মালদা চাঁচলের মহকুমা শাসক (SDO) সঞ্জয় পাল। রাজ্য বা জেলা প্রশাসনের নির্দেশ ছাড়াই জল ডিঙিয়ে সটান হাজির হয়েছেন করোনা আক্রান্তদের (Corona Patient) বাড়িতে। শনিবার, চাঁচলের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল কাদা ডিঙিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হেলথ ড্রিঙ্ক, ওষুধ, স্যানিটাইজার, মাস্ক ও শুকনো খাবার পৌঁছে দেন মহকুমা শাসক। এলাকাবাসীদের কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শও দেন। এদিন, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নোডাল অফিসার তথা চিকিৎসক শুভাশিষ বড়ুয়া।

বিগত কয়েকদিন ধরে ঝড়বৃষ্টির দাপটে চাঁচলের একাধিক রাস্তা জলমগ্ন। কোথাও হাঁটু পর্যন্ত জল,কোথাও বা কোমরডুবি। তারমধ্য়েই অবলীলায় পায়ে হেঁটে করোনা আক্রান্তদের ঘরে ঘরে যান সঞ্জয়বাবু (SDO)। বাড়ির কাছে এভাবে মহকুমা শাসককে আপ্লুত স্থানীয়রা। এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, সঞ্জয়বাবু যে এভাবে বাড়ি বাড়ি এসে ওষুধ পত্র পৌঁছে দিয়ে যাবেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি কেউ। ঘূর্ণিঝড়েক জেরে কার্যত বানভাসি চাঁচলে নিজেদের ‘খেয়ে-পড়ে’ বেঁচে থাকাটাই আপাতত সর্বাধিক জরুরি মনে করেছেন স্থানীয়রা। সেখানে মহকুমা শাসকের (SDO) এভাবে বাড়িতে আসায় একদিকে যেমন অবাক তেমন খুশিও এলাকাবাসী। মহকুমা শাসক সঞ্জয়বাবু বলেন, “করোনাকালে মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজ্য বা প্রশাসনের নির্দেশে নয়, আমরা নিজেরাই উদ্য়োগ নিয়ে ‘গেট ওয়েল সুন’ নামে একটা প্রকল্পধারা করেছি। মানুষের কাছে অতি প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। সঙ্কটজনক মুহূর্তে মানুষের পাশে থাকাটা জরুরি। আমরা চাই, দ্রুত সকলে সুস্থ হয়ে উঠুন।” সঞ্জয়বাবুর বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীতে। আদিবাস আলিপুরদুয়ার। সঞ্জয়বাবু বড় হয়েছেন কলকাতার গড়িয়ায় ‘কঠোর নিয়মের মধ্যে’। মালদায় আসার আগে কোচবিহার সদরের মহকুমা শাসকের পদ সামলেছেন। মালদায় বদলি হয়ে আসার পরেই করোনা আবহে তাই আর বসে থাকেননি। সাধারণের সাহায্যে যখন যেভাবে পেরেছেন পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। মহকুমা শাসকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চাঁচলের বাসিন্দারা।

উল্লেখ্য, রাজ্যে লকডাউন (Lock Down) জারি হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। কিন্তু, স্বস্তি দেয়নি মৃত্যুহার। শনিবার স্বাস্থ্যদফতরের প্রকাশিত বুলেটিনে দেখা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৫১৪ জন। তবে, শেষ একদিনে মৃত্য়ু হয়েছে ১৪৮ জনের। রাজ্যে বর্তমানে পজিটিভিটির হার নেমে এসেছে ২০ শতাংশের কাছাকাছি। বঙ্গে বর্তমানে সুস্থতার হার ৯১.৩২ শতাংশ। যদিও,এই পজিটিভিটির হার যতক্ষণ না ৫ শতাংশের নীচে নামছে ততক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আরও পড়ুন: লকডাউনে নৌকা পাহারা দিতে গিয়ে বেধড়ক মার খেল কিশোর, ভাঙল হাত, কাঠগড়ায় ভালুকা ফাঁড়ির ইনচার্জ!