মালদা: রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা শরীর। বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। ভেসে আসছে আর্ত চিৎকার। গুরুতর আহত অবস্থায় এক রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Malda Medical College)। অভিযোগ, প্রাথমিক চিকিৎসার পরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ওই রোগীকে। এমনকি রোগীর পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে গেলে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যখন ওই রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয় তখনও তিনি অচৈতন্য ছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই মালদা মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে মুখ্য-সচিব এবং জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে খবর। ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদার ইংরেজবাজার পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের জাহাজফিল্ড এলাকায়। সূত্রের খবর, গত ২৯ মে নিখোঁজ হন বলরাম মণ্ডল নামে এলাকারই এক যুবক। ৩০ তারিখ ভোরে জোড়া পুকুর এলাকায় তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। গলায়, মাথায় ক্ষত চিহ্ন।
ওই অবস্থাতেই তাঁকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে তাঁর মাথায় ২২টি সেলাই পড়ে। যদিও তাঁর শারীরিক অবস্থা বিশেষ উন্নতি হয়নি। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা করে পরের দিনই ছেড়ে দেওয়া হয় বলরামকে। ছাড়ার সময়ও অচৈতন্য ছিলেন বলরাম। এখন বাড়িতে আনা হলেও কাতরাচ্ছেন যন্ত্রণায়। উঠতেই পারছেন না বিছানা থেকে। এদিকে তাঁদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। তাই চিকিৎসা না হলে কীভাবে বলরামকে বাঁচানো যাবে তা ভেবেই দিশাহারা তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে বলরামের বাড়ির সদস্য সাবিত্রী মণ্ডল বলেন, “হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেলাই করে একদিন রেখে দিয়ে পরের দিনই ছুটি দিয়ে দিয়েছিল। এদিকে তখনও ও অজ্ঞান। আমাদের হাসপাতালের তরফে বলা হল রোগীকে বাড়ি নিয়ে চলে যান। এখন ওইভাবেই পড়ে আছে ও। কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। কাল আবার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু, ভর্তি নেয়নি।”
আহতের দাদা উত্তম মণ্ডল বলেন, “আমার ভাইকে ওরা চিকিৎসা না করেই ছেড়ে দিয়েছে। কথা বলতে গেলে জোর করে বেড় করে দেয় হাসপাতাল থেকে। শেষে অজ্ঞান অবস্থাতেই ওকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসি। কাল আবার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু, ভর্তি নেয়নি।” হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ পুরঞ্জয় সাহা বলেন, “একটু আগেই আমি বিষয়টা জানতে পেরেছি। বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয় তাহলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”