মালদহ: তৃণমূলের (TMC) পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন ঘিরে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অবরুদ্ধ হল জাতীয় সড়ক। আর সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের দিকে ধেয়ে এল গুলি! পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হল পুলিশ। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আহত হলেন পুলিশ অফিসার, সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে তৃণমূলের নেতারা। শুক্রবার চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
শুক্রবার ছিল কালিয়াচক ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত এই পঞ্চায়েত এদিন নবনির্বাচিত প্রধান হন তৃণমূলের আলিউল শেখ ওরফে জ্যোতি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন সদস্য প্রধান পদে আলিউল শেখকে সমর্থন করেন। ফলে নতুন প্রধান নির্বাচিত হন তিনি। বাকি পঞ্চায়েত সদস্যরা এদিন সভায় আসেননি। এদিকে গোটা পর্বে টানটান উত্তেজনা ছিল। তাই আগে থেকেই প্রহরায় ছিল পুলিশ। একবার দুই পক্ষের হাতাহাতি ছাড়িয়েছে তারা। কিন্তু তার পর তৈরি হল তুলকালাম পরিস্থিতি।
নতুন প্রধান নির্বাচনের পর বিজয় মিছিলে বেরোয় তৃণমূলের এক পক্ষ। অন্যদিকে আরেক পক্ষ তাদের আক্রমণ করে বলে খবর। শুরু হয় মারামারি, বিশৃঙ্খলা। এর পর উত্তেজনা প্রশমন করতে ছুটে যায় পুলিশ। কিন্তু প্রথমে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মারধর করা হয় বলে খবর। এমনকি তার পর পুলিশ অফিসাররা গেলে তাঁদেরও গায়ে হাত তোলা হয়। তার পর মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ধেয়ে আসে গুলি। এর পর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জাতীয় সড়ক। পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়।
এই গোলাগুলি এবং আক্রমণে বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসার ও সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হন বলে খবর। অন্যদিকে তৃণমূলের কয়েকজনও আহত হয়েছেন বলে খবর।
উল্লেখ্য, কালিয়াচক এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত গঠনের পর থেকেই উত্তেজনা ছড়ায়। এবার পুলিশের উপরই হামলার ঘটনা ঘটল। পাল্টা গুলি চালানোর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে তুলল তৃণমূল। এর আগে কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন আমিরুল সেখ। কিন্তু মোট পনেরো জন সদস্যর মধ্যে অধিকাংশ সদস্য আমিরুলের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন। তার পর এদিন প্রধান গঠন সভাকে ঘিরে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে কালিয়াচক থানার পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে নতুন প্রধান হওয়ার পর পঞ্চায়েত সদস্যরা থেকে শুরু করে তৃণমূল কর্মীরা আনন্দে মেতে ওঠেন। তারা রাস্তায় ঢোল, তাসা, ব্যান্ড বাজিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। একদিকে বাজি পটকাও ফাটে। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস থেকে কালিয়াচক চৌরঙ্গি পর্যন্ত রাস্তায় আবির খেলেন কর্মীরা। তার মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়াল তারা। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে গুলি পর্যন্ত চালাতে হল পুলিশকে!
আরও পড়ুন: Krishna Kalyani Resigns From BJP: দল ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণকল্যাণী