মালদহ: নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চাপে রয়েছে শিক্ষা দফতর। দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। এই ইস্যুতে রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন সামনে এল এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছবি, যা আরও একবার শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের হলদিবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নাকি শিক্ষকদের দেখা পাওয়াই ভার। স্কুলের মধ্যে খোলা হয়েছে মুদিখানা দোকান। দোকানদারিতেই ব্যস্ত থাকেন শিক্ষকেরা। এই ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূলের।
ওই স্কুলের অন্যতম সহকারী শিক্ষক, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানিক দাস। অভিভাবকদের দাবি, তিনি নাকি কার্যত ভুলেই গিয়েছেন স্কুলের পথ। বেশির ভাগ দিনই নাকি স্কুলে যান না তিনি। এই নিয়ে অভিভাবকরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন স্কুলে। বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি অভিভাবকদের। তাঁরা বলছেন, নিয়মিত ক্লাস হয় না এই স্কুলে। শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের দিয়ে স্কুল পরিষ্কারের কাজ করান। স্কুলের ভিতরে চলছে ন্যায্য মূল্যের দোকান। শিক্ষক হিমাংশু দাস এবং তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি দাস দোকান খুলেছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ক্লাস না করিয়ে সেখানে দোকানদারি করতে বসানো হয় ছাত্রদেরও। পড়াশোনা তো দূরের কথা প্রার্থনা সঙ্গীতও নাকি গাওয়া হয় না নিয়মিত। অজয় রায় নামে এক অভিভাবক জানান, পঠন পাঠনের অবস্থা এত খারাপ যে টিউশনে না দেওয়া হলে কিছু শিখতেই পারছেন না পড়ুয়ারা।
অভিভাবকরা বলছেন, বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও। যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে এই বিক্ষোভকে বিরোধীদের চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা মানিক দাস। তাঁর দাবি, দলের কাজে তিনি মাঝে মধ্যে ছুটি নেন, একথা সত্যি। তবে স্কুলে আসেন না, তা নয়। এটা আসলে বিরোধী দলের লোকজন ষড়যন্ত্র করে প্রচার করছে বলে দাবি করেছেন তিনি। আর মুদিখানা দোকান? সে ব্যাপারে তিনি নাকি তেমন কিছুই জানেন না। মালদহের জেলা বিজেপি কমিটির সদস্য কিষাণ কেডিয়াও অভিযোগ এনেছেন ওই স্কুলের বিরুদ্ধে। তিনিও দাবি করেছেন ৮০ শতাংশ শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন বেশিরভাগ সময়, শিশুদের দিয়ে স্কুল পরিষ্কার করানো হয়। তাই অভিভাবকদের বিক্ষোভ দেখানোর যথেষ্ট কারণ আছে বলে মনে করেন তিনি।