মালদহ: মালদহ থেকে গ্রেফতার হওয়া চিনা (China) ‘গুপ্তচর’ হান জুনকে (Han Zeune) নিজেদের হেফাজতে নিল লখনউ এটিএস (ATS)। বুধবার রাতে মালদহ জেলা সংশোধনাগার থেকে হানকে নিয়ে রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে রওনা হন এটিএস আধিকারিকরা। লখনউ সিজিএম আদালতে তোলা হবে চিনা নাগরিককে।
এর আগে কয়েক দফা হানকে জেরা করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ (STF)। আগে ধুরন্ধর হান জানিয়েছিলেন তাঁর ম্যাকবুকের পাসওয়ার্ডই নাকি তিনি ভুলে গিয়েছেন। এবার অনেক চেষ্টার পরেও হানের ল্যাপটপ খুলতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। এমনকি তাঁর পেনড্রাইভ থেকে পাওয়া তথ্যের পাঠোদ্ধারও সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, হানের মোবাইল পেনড্রাইভে যে তথ্য রয়েছে তা ম্যান্ডারিন ভাষায় লেখা। তাই সেই সব তথ্যের পাঠোদ্ধার করা যায়নি। এই সব কারণে হানের কাছ থেকে পাওয়া নানা জিনিসপত্র, ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস ইত্যাদি পাঠানো হয় হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবে। সেখানে ফরেনসিক করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষিতে বুধবার মালদহে আসেন লখনউ এটিএসের আধিকারিকরা। প্রোডাকশন রিমান্ডে তাঁরা জেল থেকেই হানকে নিয়ে যাবেন লখনউ। হানের বিরুদ্ধে লখনউ এটিএসএর কাছে একাধিক অভিযোগে মামলা রয়েছে। এদিকে জেল হেফাজত থাকা হানকে আগামী ৯ জুলাই ফের মালদহে আদালতে তোলার কথা।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয় চিনা নাগরিক হান জুনেইকে। মূলত গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগেই হানের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফকে। এমনকি চিনা নাগরিকের সঙ্গে চিনের সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ থাকার সম্ভাবনাও ক্রমে জোরাল হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে হাওয়ালাযোগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু সেই হানকে ‘গুপ্তচর’ বলায় আপত্তি জানায় ভারতে অবস্থিত চিনা রাষ্ট্রদূতের অফিস।
এদিকে হান জুনেইকে জেরায় উঠে আসছে হাওয়ালা যোগের কথাও। ২০১৯ সালে ভারতের গুরুগ্রামে স্টার্ট স্প্রিং হোটেল নামে আট কোটি টাকার একটি হোটেল কিনেছিলেন হান। কিন্তু এই বিপুল টাকা তিনি কোথা থেকে পেলেন? সে প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়েই তদন্তকারীরা জানতে পারছেন বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমার, ভারত ও চিনে হাওয়ালার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন চলত হানের।
আরও পড়ুন: রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার গৃহবধূর রক্তাক্ত দেহ
দিনের পর দিন ভারতের তথ্য তুলে দেওয়া হচ্ছিল চিনের হাতে। ভারতের সিম কার্ড পাচার করা হচ্ছিল চিনে। মালদহ থেকে গ্রেফতার হওয়া হানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। অথচ সেই হানকে গুপ্তচর বলাতেই বাধ সেধেছে চিন!