মালদা: দোতলা-তিনতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পের বাড়ির তালিকায় নাম রয়েছে এই অভিযোগ ভূরি-ভূরি উঠেছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বারবার অভিযোগ করেছে শাসকদলের নেতার নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে ঘর হাতিয়েছেন। যদিও, সেই অভিযোগ খন্ডনও করেছে তৃণমূল। এমন আবহে এবার আবাস যোজনার দুর্নীতির কথা মেনে নিয়ে পদত্যাগ করলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের। আর পদত্যাগ করেই দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিনি।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বড়োই গ্রাম পঞ্চায়েতের চয়নপুর বুথের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য টিঙ্কর মহালদার। গত ২৫ তারিখ আবাস যোজনার তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে ঘিরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল টাকার বিনিময়ে সমীক্ষা হয়েছে। ১৫-২০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়ে ঘর দেওয়া হয়েছে। যাঁদের প্রকৃত ঘরের প্রয়োজন, তাঁদের কারোর নাম তালিকায় নেই। সেই সময় কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ওই বুথে সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা পঞ্চায়েতের গ্রাম সম্পদ কর্মী মুক্তার আলম ও টিঙ্কর মহলদারের বিরুদ্ধে। এরা দু’জনই সক্রিয় ভাবে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত এবং এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ওই এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল নেতা কোণঠাসা করে রেখেছিল টিঙ্করকে। বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে শেষমেশ বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক অফিসে গিয়ে ইস্তফা দেন টিঙ্কর। ইস্তফা দিয়েই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে সমস্যা চলছে গ্রামে। আমরা কিছুই করিনি। যা করেছে আশাকর্মীরা করেছে। কিন্তু গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করতে চাইছেন না। জনগণ আমাকেই বলছে। গ্রামে গেলেই গালিগালাজ করছে। সেই কারণে ইস্তফা দিয়েছে।” এরপর তিনি বলেন, “দুর্নীতি হয়েছে। আমাদের দলের লোকেরাই দুর্নীতি করেছে। তাই মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আমি পদ থেকে ইস্তফা দিলাম শুধু তবে এই দলই করব।” অন্যদিকে, হরিশচন্দ্রপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, “এটা বিজেপির চক্রান্ত। ওদের জন্যই চারিদিকে এই ধরনের একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। ঘরের যোগ্য যারা তাঁরা অবশ্যই ঘর পাবেন।” বিজেপি নেতা রূপেশ আগারওয়াল বলেন, “ওরা বুঝতে পারেনি জনগণ ওদের সঙ্গে খেলা করবে। এরপর ইস্তফা দেওয়ার লাইন পড়ে যাবে। পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী পাবে না।”