মালদহ: প্রাথমিক থেকে একাদশ-দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির শিকড় ঠিক কোথায়, তা খুঁজতে মরিয়া কেন্দ্রীয় সংস্থা। একের পর এক গ্রেফতারির পরও অধরা নিয়োগের অনেক রহস্য। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগের প্যানেলে নাম না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে কেউ দিনের পর দিন শিক্ষকের চাকরি করতে পারেন! তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামনে এসেছে এমনই এক শিক্ষকের নাম। ২০২১ সাল থেকে দিব্যি শিক্ষকতা করছেন তিনি। অভিযোগ, প্যানেল বা ওয়েটিং লিস্ট কোথাও নাম ছিল না তাঁর।
মালদহের উমেশচন্দ্র বাস্তুহারা বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক দেবব্রত পাণ্ডে। জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সুপারিশ পত্র পেয়েছিলেন। একমাস পর পেয়েছিলেন নিয়োগ পত্র। তবে তিনি স্কুলে যোগ দেন এক বছর পর ২০২১ সালে। স্কুল জানাচ্ছে, বৈধ কাগজপত্র নিয়েই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন দেবব্রত। ২০১৬ সালে একাদশ-দ্বাদশে যে শিক্ষক নিয়োগ করেছিল এসএসসি, তাতেই চাকরি পেয়েছিলেন দেবব্রত। অন্তত নথি সে কথাই বলছে। কিন্তু ওই নিয়োগে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, সেই চাকরি প্রার্থীরা জানাচ্ছেন, প্যানেলে বা ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল না দেবব্রতর। তাহলে কোন ম্যাজিকে তিনি পেয়ে গেলেন নিয়োগ পত্র?
দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, নিয়োগ পত্র যখন পেয়েই গেলেন, তখন এক বছর বাদে কেন যোগ দিলেন স্কুলে? উত্তর পেতে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় ওই শিক্ষকের সঙ্গে। স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, তিনি অনুপস্থিত। বুধবার পর্যন্ত স্কুলে গেলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে বৃহস্পতিবার যাননি তিনি। অনুপস্থিতির কারণ জানেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষকও।
দেবব্রত স্কুলে যোগ দেওয়ার সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন অচিন্ত্য কর্মকার। তিনি জানান, সুপারিশ পত্র ও নিয়োগ পত্র অর্থাৎ বৈধ নথি নিয়েই স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন দেবব্রত। তবে প্যানেলে নাম ছিল কি না, সে বিষয়টা তাঁদের জানা নেই। তিনি আরও জানিয়েছেন, দেবব্রতর ক্ষেত্রে ডিআই অফিস থেকে ইন্টিমেশন পেতে দেরি হয়েছিল।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে আদালতে সিবিআই যে রিপোর্ট দিয়েছিল, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল যে তালিকার বাইরে থাকা অনেকেই চাকরি করছেন। এসএসসি-ও বিষয়টা অস্বীকার করেনি।