Malda: TMC-র পঞ্চায়েত সদস্যাকে ঘর থেকে পালিয়ে নিয়ে যায়, সালিসি বসিয়ে নাবালকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার জরিমানার অভিযোগ
Malda Kangaroo Court: ঘটনার কয়েক মাস পর মেয়েকে ফোনে কুরুচিকর গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে ছেলের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মদতে সালিশি হয়। গ্রামের মাধব কুণ্ড নামে এক প্রবীণ ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয় সালিশি সভার।

মালদহ: তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের মেয়েকে বিয়ে। গ্রামে সালিশি সভা ডেকে ছেলের পরিবারের জরিমানা ৫০ হাজার টাকা। টাকা দিতে না পারলে ছেলের বাড়ি ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি। তৃণমূলের দাদাগিরির অভিযোগ মালদহের ইংরেজবাজারের যদুপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রামে। কাঠগড়ায় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়পুর গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার মেয়ের সঙ্গে গত ছয় মাস আগে বিয়ে করে গ্রামের এক নাবালক। মেয়ের পরিবারের দাবি, গভীর রাতে বাড়িতে গিয়ে মেয়ের ঘরের জানালা দিয়ে ডেকে নিয়ে যায় ওই নাবালক। সেই ছবি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরাও পড়েছে। তারপর থেকেই দুই পরিবারের বিবাদ শুরু হয়। তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করে বাড়িতে। সালিশি বসানো হয়। বিয়ের কিছুদিন পর ছেলে অসুস্থ হলে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসে পরিবারের সদস্যরা।
ঘটনার কয়েক মাস পর মেয়েকে ফোনে কুরুচিকর গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে ছেলের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের মদতে সালিশি হয়। গ্রামের মাধব কুণ্ড নামে এক প্রবীণ ব্যক্তিকে সভাপতি করা হয় সালিশি সভার। সেই সভাতে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যা ডলি মন্ডল ও তাঁর স্বামী এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা উত্তম। দু’পক্ষের কথা শুনে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ছেলের পরিবারকে। অভিযোগ, চুক্তিপত্র লিখিয়ে নেওয়া হয়, জরিমানার টাকা নির্দিষ্ট বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই দিতে হবে।
এরপর পঞ্চায়েত সদস্যের মেয়ে আবার গভীর রাতে ওই ছেলের সঙ্গে চলে যায়। এরপরে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ছেলে-মেয়েকে উদ্ধার করে হোমে পাঠায়। তবে তৃণমূল নেতাদের সালিশি সভা করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলায় ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়েছে।
তৃণমূল নেতা উত্তম মণ্ডল বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশ পদক্ষেপ করবে। ফোনে আমার মেয়েকে খারাপ কথা বলেছে। তারপরই বসা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যাতে এরকম কোনও কথা না বলে। জরিমানা করা হয়নি। বলা হয়েছিল, পরবর্তীতে কোনও কথা বললে জরিমানা করা হবে। তবে পরেরটা আর জানি না, আমি বেরিয়ে গিয়েছিলাম। চেয়েছিলাম পাড়ায় বসে সমাধান করব।”
বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এরকমভাবেই তৃণমূলে টাকা তোলা হয়। তারপর সেই কাটমানি ডিস্ট্রিবিউট হয়। তৃণমূলের নেতানেত্রীরা ভাবে, আমাদের ক্ষমতা চলছে রাজ্যে। তাই পুলিশের সামনেই সব হয়। এটা একটা শিল্পে পরিণত হয়েছে।”
