মালদহ: কারোর বয়স পাঁচ কী ছয়, কারোর চার, কারোর তিন। সেই সন্তানদের নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বাবা বিরুদ্ধে। শুধু সন্তান নয়, অত্যাচার চলত স্ত্রী-র উপরও। অপরাধ কী? স্বামী চেয়েছিলেন পুত্র কিন্তু পরপর তিনবারই গৃহবধূ জন্ম দিয়েছেন কন্যা সন্তানের। সেই কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছিল গৃহবধূর স্বামীর বিরুদ্ধে। এরপর রবিবার ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উঠল মারাত্মক অভিযোগ, তিন কন্যা সন্তান সহ মাকে বিষ খাইয়ে খুনের চেষ্টা। কোনও ভাবে দুই শিশু পালিয়ে বাঁচলেও তিন বছরের কন্যা সন্তান সহ গৃহবধূ ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদহর গাজোল থানার গোসানিবাগ এলাকায়। যদিও, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
নির্যাতিতার গৃহবধূর পরিবার সূত্রে খবর, গাজোলের আলতোর গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা মণ্ডল (৩২)। তাঁর সঙ্গে গাজোল থানারই গোসানিবাগ এলাকার বাসিন্দা দীপক মণ্ডলের সঙ্গে বারো বছর আগে বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর অর্পিতা তিনবারই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, তারপর থেকেই অত্যাচার শুরু করেন দীপক। নিয়মিত স্ত্রী ও তিন কন্যার ওপর নির্যাতন চালানো হত।
অভিযোগ, এরপর গতকাল রাত্রিবেলা গৃহবধূ ও তাঁর তিন কন্যা সন্তানকে মারধর করে জোর করে কীটনাশক খাওয়ানোর চেষ্টা করেন দীপক। এক মেয়ে ও তাঁর স্ত্রীকে যখন কীটনাশক খাওয়ানো হচ্ছে তখনই দুই কন্যা সন্তান সেইখান থেকে কোনও মতে পালিয়ে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানায়। তড়িঘড়ি এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশু ও গৃহবধূকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেইখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে রাতেই তাঁদের মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে গৃহবধূর পরিবার।
গৃহবধূর বাবা গণেশ মণ্ডলের দাবি,তাঁর মেয়ের পরপর তিন কন্যা সন্তান হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার করে চলেছে জামাই। গতকাল রাতে মেয়ে এবং তিন নাতনিকে কিটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সেই সময় দুই নাতনি সেইখান থেকে পালিয়ে গ্রামবাসীদেরকে বিষয়টি জানায়। বর্তমানে এক নাতনি ও মেয়ে মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নির্যাতিতার মা মালতি মণ্ডল বলেন,”জামাই আমার মেয়ের পর পর তিন কন্যা সন্তান হওয়ার জন্যই আমার মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল।
যদিও, অভিযুক্ত দীপক মণ্ডলের দাবি, অর্পিতার সঙ্গে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। তা জানাজানি হতেই ওই মহিলা সন্তানদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।