রতুয়া: নদী পাড়ে বাস। চিন্তা বারো মাস। না এটা কথার কথা নয়। মালদহের রতুয়া, মানিকচকের বাসিন্দাদের কাছে এটা আতঙ্কের বাণী। বিঘের পর বিঘে নয়। এখন আস্ত গ্রামই গিলে খাচ্ছে গঙ্গা। ঘরছাড়া কয়েক হাজার পরিবার। তার মধ্যে ১১৬টি পরিবারের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সরব হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। তার পরই পদক্ষেপ। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
পায়ের তলায় মাটি নেই। মাথার উপর ছাদ নেই। আছে বলতে বুক ফাটা কান্না, আর অসহায়তা। হবে নাই বা কেন। বর্ষার ভয়াল গঙ্গ গিলে খেয়েছে ভিটেমাটি। ফি বছর বর্ষা মানেই মালদহে নদী পারের বাসিন্দাদের আতঙ্কের দিন যাপন। এবারও সেই ছবির বদল হয়নি। গত কয়েকদিন ধরে মালদহের মানিকচক ও রতুয়া ব্লকে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে গঙ্গা।
বেশ কয়েকদিন ধরে রতুয়ার মহানন্দাটোলায় ভাঙন চলছে।ভাঙনের গ্রাসে কার্যত তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েক হাজার পরিবার। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১১৬ পরিবার। শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে পূনর্বাসনের দাবিতে DM অফিসে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। জেলাশাসককে না পেয়ে অফিসে ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি থেকে রাত পর্যন্ত ধর্না-বিক্ষোভ।
জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১১৬টি পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য তৈরি হয়েছে টাস্ক ফোর্স। টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন SDO, BDO, পুলিশ ও সেচ দফতরের আধিকারিক। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বিকল্প জমির খোঁজ করবে কমিটি।
মালদহে ভাঙন সমস্যা নতুন কিছু নয়। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলা সফরে গিয়ে ভাঙন মোকাবিলায় আগাম পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরও কেন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি? বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর অভিযোগ, “জল যখন বাড়ে তখন রাজ্য সরকার খুব তৎপর হয়ে যায়। আসলে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের যে টাকা আসে সেটাকে কীভাবে লুঠ করা যায়, আত্মসাৎ করতেই এই কাজ।”
যদিও, সাংসদের অভিযোগ মানতে নারাজ সেচ দফতরের আধিকারিকরা। দফতরের আধিকারিক চিরঞ্জিব মিশ্র বলেন, “সেচ দফতর সারা বছরই নজর রাখে। ভাঙনের তীব্রতা বাড়লে সেচ দফতর তৎপর হয়। যতটা ভাঙন রোধ করা যায় সেই চেষ্টা করে।”