মালদহ: সর্বস্ব গিলেছে নদী ভাঙন। মানুষগুলো থাকবে কোথায়? এই প্রশ্নকে সামনে রেখেই শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনচত্বর। এদিন ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবিতে জেলা শাসকের দফতরে যান বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু-সহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। বাধা পেলে জোর করে গেটের ভিতরে ঢুকে পড়েন সাংসদ খগেন মুর্মু, বিজেপির নেতা কর্মী সহ শতাধিক ভাঙন কবলিত মানুষ। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তিও হয়। এরপরই প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধরনায় বসেন সাংসদ। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে ধরনা চলছে। এই খবর লেখা পর্যন্ত (রাত সাড়ে ৯টা) ধরনা ওঠেনি। জেলাশাসক দফতরে আসেন রাাতেই। খগেন মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। ইংরেজবাজার থানার আইসি খগেন মুর্মুকে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এরপর কয়েকজনকে নিয়ে খগেন মুর্মু জেলাশাসকের ঘরে যান।
সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “১১৬টা পরিবার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। উনি দেখা করার সময় পাচ্ছেন না। দুয়ারে সরকার করছেন উনি। এদিকে ওনার দুয়ারে এসে মানুষ বসে আছে। মানুষগুলো নিজের এলাকায় নদীর জলে ভাসছেন। আর জেলাশাসকের কাছে এসে চোখের জলে ভাসছেন। আমরা কান্তটোলা গ্রামের ১১৬টা পরিবারের সঙ্গে এসেছি। মহানন্দাটোলা অঞ্চলের এই পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দিতেই হবে জেলাশাসককে। না হলে আমরা এখান থেকে উঠব না। এখনও তো হরিশচন্দ্রপুর, মানিকচকের মানুষগুলোকে ডাকিইনি। কালিয়াচকেও একই ছবি।” জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া দেখা না করা অবধি তাঁরা যাবেন না বলে জানান।
প্রতি বছরই পুজোর আগে ভাঙনের মুখে পড়ে গ্রামকে গ্রাম। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যখন আগমনীর আবাহনের প্রস্তুতি, মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকায় তখন কার্যত বিপদের পদধ্বনি দিনরাত। মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা এরকমই গ্রাম। এবারও ভাঙনের তোড়ে তলাতে বসেছে একের পর এক বাড়ি। ইতিমধ্যে জলের তলায়ও গিয়েছে বহু ঘর। মহানন্দাটোলার কান্তটোলায় সম্প্রতি ১১টি ভাঙনের কবলে জলের নীচে চলে গিয়েছে। আরও একাধিক জায়গায় একই অবস্থা। নদী ঢুকে পড়েছে গ্রামের ভিতরে। শতাধিক পরিবার গ্রামছাড়া। এবার সেই মানুষগুলিকে সঙ্গে নিয়েই জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধরনায় বিজেপি সাংসদ।