মালদহ: বুকে মমতার ছবি, পেছনে কর্মীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্ষমা চাইছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। করজোড়ে তৃণমূল কাউন্সিলর বলছেন, ‘সব সময় পাশে থাকি তাহলে তৃণমূলকে ভোট কেন দিলেন না লোকসভায়?’ আগামীদিনে আরও পাশে থাকার বার্তা দিয়ে সতর্ক করে দিচ্ছেন, ‘এই ভুল যাতে না হয়’। একুশে জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরই ‘শুদ্ধকরণ’ যাত্রায় মালদহ পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর।
প্রসঙ্গত, একুশের মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতা কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, “যেখানে যেখানে জিতেছেন, সেখানে সেখানে মানুষের কাছে গিয়ে ধন্যবাদ জানান। তাঁদের কোন কাজ বাকি রয়েছে, করবেন। যেটা পারবেন না দলকে জানাবেন। আর যেখানে আমরা জিতিনি, সেখানে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বলবেন, আমাদের ক্ষমা করবেন, হয়তো আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতায় কোনও খামতি ছিল, আগামী দিন যাতে না হয়, আমরা দেখব। আমাদের আর্শীবাদ করবেন।” সঙ্গে নেত্রী এও বলেছিলেন, “গাড়িতে ঘোরার চেয়ে পায়ে হেঁটে গ্রামে ঘোরা ভালো।”
নেত্রীর এহেন নির্দেশের পরই সক্রিয় মালদহ নেতৃত্ব। কারণ মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। মালদহ উত্তরে বিজেপি ও মালদহ দক্ষিণে বাম-কংগ্রেস জোটের হাতে গিয়েছে। মালদহের কথা উল্লেখ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং, জোর দিয়েছিলেন দুটি লোকসভার ওপরে। ছাব্বিশকে টার্গেট রেখেছেন নেত্রী। ‘মালদহের আম ও আমসত্ত্ব আমরাই পাব…’ একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা।এরপরই মালদহে দেখা গেল রাস্তায় নেমে পড়েছেন নেতারা। মমতার ছবি বুকে নিয়ে হাত জোড় করে দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন তাঁরা।
ওল্ড মালদহ পুরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শত্রুঘ্ন সিনহা বর্মা তাঁর দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নিজের ওয়ার্ড বাচামারি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে জনসংযোগ করা শুরু করেছেন। সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে কাউন্সিলর জানতে চান, গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁদের থেকে কেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁরা। কাউন্সিলর আক্ষেপ করে বলেন, “বিপদের সময় আমরা থাকি, বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা আমরা পাইয়ে দিই অথচ আমাদের কেন ভোট দিলেন না?” ভুল ত্রুটির জন্যে তিনি ক্ষমা চান।
তবে তৃণমূল কাউন্সিলরের এই জনসংযোগ ও শুদ্ধিকরণ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেন বিজেপির উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “তৃণমূলের বোধ, বুদ্ধির উদয় হয়েছে এটি ভাল কথা ,বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুদ্ধিকরণ করছে। তবে খালি হাতে গিয়ে শুদ্ধিকরণ করলে হবে না। কারণ তৃণমূল নেতারা যেসব কাটমানি এবং বিভিন্নভাবে তোলা আদায় করেছে, সেসব টাকা ফেরত দিতে হবে। তবেই শুদ্ধিকরণ হবে।” তাঁর কটাক্ষ, ছাব্বিশের নির্বাচনকে সামনে রেখেই এটা তৃণমূলের নয়া স্ট্র্যাটেজি।