মালদা: ট্রেনটা সবেমাত্রা কালিয়াচকের খালতিপুর ষ্টেশনে পৌঁছেছে। ঝকঝকে চেহারার মাঝবয়সী যুবক কামরা বাঁ দিকের কোণার সিটে বসেছিলেন। চোখ ছিল বাইরের দিকে। হাতে একটা বাদামের প্যাকেট। সঙ্গের কালো ট্রলি ব্যাগটা কামরার ব্যাঙ্কারে রাখা। খালতিপুর স্টেশনের কয়েকটা স্টেশন আগে থেকেই কয়েকদিন ওই কামরাতেই উঠেছিলেন। তাঁরা আগে থেকেই নজর রাখছিলেন ওই যুবকের ওপর। তারপর এসে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন, আর তারপরই সরাসরি হাতে ‘হ্যান্ড কাফস্’। অনান্য যাত্রীরা তখনও বিষয়টি বুঝতেই পারেননি ঠিক কী হয়েছে। তারপর যখন ওই কালো ট্রলির চেনটা খোলা হয়, গা দিয়ে ঘাম ঝরতে থাকে যাত্রীদের। ট্রেনে করেই অস্ত্র পাচার!
একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র সহ ট্রেন থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল এসটিএফ। বছর আটত্রিশের ফয়জ্জল মহম্মদ বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। জেরায় জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে যুক্ত। অত্যন্ত পোড় খাওয়া এ বিষয়ে। তা না হলে এতটা অবলীলায় ট্রেনেই সে অস্ত্র নিয়ে যেত না! ওই অস্ত্র পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স। সোমবার রাতে ডাউন কাটিহার এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
খালতিপুর স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে চারটি অত্যাধুনিক পাইপগান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কালিয়াচকের এক দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। মালদা জিআরপি বেআইনি অস্ত্র নিয়ে ট্রেনে যাত্রা করার অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বিহারের বাসিন্দা আগ্নেয়াস্ত্রগুলি কালিয়াচকের কারোর কাছে বিক্রি করতেই ট্রেনে যাচ্ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, স্পেশ্যাল টাস্কফোর্সের অফিসারেরা ওই ব্যক্তিকে আটক করে। ধৃতের কাছ থেকে এই চক্রের অনেকের নাম উঠে আসবে বলেই তদন্তকারীরা মনে করছেন।