Malda Murder: নিছক ভাইয়ের হুমকিতেই চার মাস মুখ বন্ধ? কম রহস্যময় নয় আসিফের দাদা আরিফের গতিবিধি

Malda Murder: মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, "আরিফের চেহারা আসিফের চেয়ে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যবান। তরুণ। জলে ফেলার পর ও নিজেকে মুক্ত করে পালাতে পেরেছে।"

Malda Murder: নিছক ভাইয়ের হুমকিতেই চার মাস মুখ বন্ধ? কম রহস্যময় নয় আসিফের দাদা আরিফের গতিবিধি
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 20, 2021 | 3:46 PM

মালদহ: কালিয়াচকে (Maldah Murder) একই পরিবারের চারজনের খুনের ঘটনার প্রতি ভাঁজেই রহস্যের পর্দা। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফ ও তাঁর দুই বন্ধু সাবির আলি এবং মহফুজ শেখকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের পুলিশি হেফাজতও হয়েছে। এই তিনজনকে ঘিরে তদন্ত এগোবে নিজের ছন্দে। কিন্তু একইসঙ্গে পুলিশের স্ক্যানারে আসিফের বড় দাদা আরিফও। যাঁর প্রতিটা বক্তব্যেই পাল্টা প্রশ্ন ছোড়া যায়।

আরিফ সেই ব্যক্তি, যাঁকে বাবা-মা-বোন-ঠাকুমার সঙ্গেই মারতে চেয়েছিল আসিফ। কিন্তু আরিফের বক্তব্য, তিনি পালিয়ে বেঁচেছেন। পুলিশও আরিফের সেই বক্তব্যকে মান্যতা দিয়েছে। কিন্তু আরিফের এই বক্তব্যে একটা ‘তবু’ থেকেই যায়। একটি তরতাজা যুবক, যাঁর সামনে মা, বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে ভাই মেরে ফেলল, চার মাস ধরে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া হল না? পরিবারের চার সদস্যর খুনের কথা এই আরিফই কিন্তু পুলিশকে জানায়। অথচ তা জানাতে চার মাস সময় লেগে গেল? কেন চারমাস পর আরিফ পুলিশের দ্বারস্থ হলেন? কেন আগে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেননি আরিফ?

আরিফের দাবি, তাঁকেও খুন করার চেষ্টা করেছিল আসিফ। কিন্তু তিনি কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন। আরিফ জানিয়েছেন, অনেকদিন ধরেই তাঁর ভাই বাড়িতে কারও সঙ্গে মেলামেশা করত না। একা একা থাকত। এমনকী, তার ঘরে যেতেও বারণ করেছিল। প্রাথমিকভাবে মানসিক অবসাদেই ভাই ভুগছে এমনটা মনে করেছিলেন আরিফ। এরইমধ্যে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাবা,মা, বোন, ঠাকুমার সঙ্গে তাঁকেও ঘুমের ওষুধ মেশানো ঠান্ডা পানীয় খাইয়েছিল আসিফ। তারপর জলে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করেছিল। ভাইয়ের সঙ্গে মারপিট করে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে কলকাতায় চলে যান আরিফ।

একটা ছেলের সামনে পরিবারের চারজনকে মেরে ফেলা হল, অথচ তিনি কলকাতায় নিশ্চিন্তে বসে রইলেন? এ প্রশ্নের জবাবে আরিফের দাবি, আসিফ তাঁর ফোন ট্যাপ করেছিল। কখন কোথায় তিনি যাচ্ছেন, সমস্ত গতিবিধিতে নজর রাখত আসিফ। ভয়ে পুলিশের কাছে যেতে পারেননি। শুক্রবার, পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে বুঝতে পেরে ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। অথচ প্রতিবেশীরা বলছেন, গত চার মাসে আরিফের সঙ্গে তাদের দেখা হয়েছে। কোনও অস্বাভাবিক আচরণ নজরে আসেনি।

কিন্তু একজনের চোখের সামনে এত বড় হত্যাকাণ্ড ঘটে যাওয়ার পরও চার মাস কেউ চুপচাপ বসে থাকতে পারেন? এও কি সম্ভব? কালিয়াচক থানার পুলিশের বক্তব্য, আরিফের মধ্যে সন্দেহজনক এখনও কোনওকিছু তাদের নজরে পড়েনি। রবিবার মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আরিফের চেহারা আসিফের চেয়ে কিছুটা হলেও স্বাস্থ্যবান। তরুণ। জলে ফেলার পর ও নিজেকে মুক্ত করে পালাতে পেরেছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তারপরই আরিফ বেরোতে পেরেছে। এরপর ওদের মধ্যে কিছু কথোপকথনও হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সেটা বলছি না।”

আরও পড়ুন: Malda Murder: খুন করল আসিফ, অস্ত্র মিলল বন্ধুদের কাছে! ‘স্বতন্ত্র ঘটনা’, কেন বলছে পুলিশ?

অর্থাৎ পুলিশ একেবারে যে আরিফকে ‘ক্লিন চিট’ দিচ্ছে তেমনটা নয়। আবার সন্দেহও যে খুব জোরাল তাও নয়। তবে এমনও হতে পারে তদন্তের স্বার্থেই অন্য ভাবে আরিফের গতিবিধিতে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। আসিফদের পারিবারিক সম্পত্তির মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। এমনও হতে পারে সেই টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই দুই ভাইয়ের মধ্যে কোনও চুক্তি হয়। যে চুক্তিতে সম্প্রতি টান পড়ায় পুলিশকে সবটা জানিয়ে দেন আরিফ। প্রশ্ন অনেক। উত্তরও হাজার। তবে কোন পথে তদন্ত এগোয়, নজর সেদিকেই।